যুদ্ধাপরাধীদের দল খ্যাত নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী নানা সমীকরণ ও হিসেব মিলিয়ে নতুন নামে রাজনীতির মাঠে আসতে সচেষ্ট হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জামায়াতের নতুন নামকরণও চূড়ান্ত করেছে দলের শীর্ষ নেতারা। জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামী নামটি পরিবর্তন করে কিছুটা আদর্শগত অবস্থা ধরে রাখতে ‘জাস্টিস পার্টি’ নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত প্রাথমিক হলেও তা চূড়ান্ত বলেই বিবেচিত হচ্ছে।
জামায়াতের একাধিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, রাজনৈতিক হালচাল বিবেচনা, রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন হারানো, বিএনপির সঙ্গে জোট থেকে বারবার ব্যবহার হওয়াসহ বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে নতুন মোড়কে রাজনীতিতে আসার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত। এরইমধ্যে ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এমনকি জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদের বিবৃতিতে দলটির প্রচার সম্পাদক এম. আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত।
নেতারা বলছে, জামায়াতে ইসলামী নামটি পরিবর্তন করে নতুন নাম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পাশ্চাত্য রাজনীতিকে অনুকরণ করেছে জামায়াত। তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন দল ‘এ কে’ পার্টির আদলে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গড়ে তুলতে চায় জামায়াত।
এ বিষয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ১৯৯৭ সালে ১৭ ডিসেম্বর তুরস্কে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে ধর্মভিত্তিক দল হিসেব আত্মপ্রকাশ করে ‘ভার্চু পার্টি’। পরে ২০০১ সালে দেশটিতে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হলে সে বছরের ২২ জুন ‘ভার্চু পার্টি’থেকে বের হয়ে ‘এ কে’ পার্টি গঠনের ঘোষণা দেন এরদোয়ান। বর্তমানে দেশটির সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল এরদোয়ানের ‘এ কে’পার্টি।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এরদোয়ানের পথেই হাঁটতে চাইছে জামায়াতের বর্তমান নেতারা। বর্তমান ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’বিলুপ্ত করে ‘জাস্টিস পার্টি’ হিসেবে আত্মপ্রকাশের জন্য জামায়াতের নেতারা একমত হয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।