সকল ক্ষেত্রে ঐক্যফ্রন্টকে অগ্রাধিকার দেয়ার কারণে জামায়াত বিএনপিকে ছেড়ে দিতে চাচ্ছে। এমন খবর চাউর হবার পরও বিষয়টি মেনে নিতে রাজি নয় বিএনপি।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতারা বলেছেন, জামায়াত যতোই চেষ্টা করুক বিএনপিকে তারা ছাড়তে পারবে না। ঐক্যফ্রন্ট আসার পরে অনেকে বলছে, আমরা জামায়াতকে অবহেলা করছি কিন্তু বিষয়টি আদতে তেমন নয়। আমরা জামায়াতের সঙ্গেই আছি। হয়তো এখন খুব একটা সময় দেয়া হয় না। তবে আমরা জামায়াতকে নিজের দলের অংশই মনে করি।
৫ নভেম্বর গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক হয়। উক্ত বৈঠকে জামায়াতকে না ডাকায় খানিকটা অভিমান থেকে জামায়াত ২০ দল ছাড়ছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে জামায়াত নেই- এমন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে এবং জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের দৃশ্যত রূপ নিয়ে যদি বিএনপি রাজনীতির মাঠে নামতে পারে তবে বিএনপি লাভবান হবে। সেক্ষেত্রে যদি জামায়াত বিএনপিকে ছেড়ে দেয়, তাতে কোনো সমস্যা হবে বলে মনে করছি না। এছাড়া জামায়াত ছাড়লে সাধারণ মানুষসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে লাভবান হবে বিএনপি।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, জামায়াতের একটি বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। এটা আমাদের মানতে হবে। বর্তমানে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে জামায়াত বিএনপি থেকে হাত ছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু এ কথা না বুঝে যদি আমরা জামায়াতকে রাগিয়ে দেই। এরপর যদি জামায়াত ২০ দল ত্যাগ করে, তখন বিএনপির শক্তি অর্ধেকে নেমে আসবে বলে মনে হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিভুরঞ্জন সরকার বলেন, জামায়াত নিয়ে দ্বিধায় আছে বিএনপি। একদিকে তারা জামায়াতকে ছাড়তে পারছে না, অন্যদিকে জামায়াতকে না ছাড়লেও বিপদ। এদিকে জামায়াতের কারণে বিএনপি তাদের গ্রহণযোগ্যতা সংকটে পড়ছে অন্যদিকে জামায়াতের ভোট ব্যাংক বিএনপির জন্য প্রয়োজন। এমতাবস্থায় বিএনপি কী করবে তাই নিয়ে দ্বন্দ্বে ভুগছে। তবে রাজনৈতিক ইমেজ পুনরুদ্ধারের জন্য ভোট কমে গেলেও জামায়াতকে বর্জন করাই বিএনপির জন্য উত্তম হবে।