১২ রকমের নেতাদের দল বিএনপি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের নেতারা যোগ দিয়েছেন বিএনপিতে। জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, জাতীয় পার্টি এমনকি আওয়ামী লীগ থেকেও বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন অসংখ্য বেনামী নেতা। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত জাতীয় পার্টির নেতারা একত্রিত হওয়াতে চাপে রয়েছে মূল বিএনপি। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, জাতীয় পার্টি থেকে আসা নেতারা এখন মূল বিএনপির জন্য আপদে পরিণত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, এই নেতারা দলের মধ্যে হতাশা ছড়ানোর পাশাপাশি দলকে বিভক্ত করার জন্য জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে এক আলোচনা সভায় জাপা থেকে বিএনপিতে যোগ দেয়া শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বিএনপির মহাসচিবের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন যে, এ ধরনের ফ্রন্ট দরকার নেই। ওই অনুষ্ঠানে তিনি এটাও বলেন যে, আমাদের নেতা খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কাউকে নেতৃত্ব দেওয়াটা ঠিক হয়নি। এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো দরকার নেই।
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে সর্বপ্রথম যিনি দল পুনর্গঠনের কথা বলেন এবং নেতৃত্বের ব্যর্থতার কথা বলেন তিনি হলেন এরশাদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। যিনি জাতীয় পার্টির অন্যতম নীতিনির্ধারক ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির অন্যতম নীতি-নির্ধারক এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য। এই নেতা ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। দলকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রায় অনুপস্থিত। কোন কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায় না। এমন প্রেক্ষাপটে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ রয়েছে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
বিএনপির আরেক নেতা নিতাই রায় চৌধুরী। তিনিও হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের ঘনিষ্ঠ নেতা ছিলেন। তিনিও পরে বিএনপিতে যোগদান করেন। যারা দলের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করতে চাইছেন এবং দলের বর্তমান নেতাদের সমালোচনা করছেন অথচ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন না, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন নিতাই রায় চৌধুরী। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বিভিন্ন বক্তব্যে সরকারের সমালোচনা করার বদলে বিএনপির সমালোচনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মূলধারার বিএনপিতে যারা রয়েছেন তারা এক বৈঠকে মিলিত হয়ে জাপা থেকে আগতদের অতিকথনে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন যে, এখন দায়িত্ব হলো সরকারের সমালোচনা করা, সরকারের ভুলত্রুটিগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরা। আন্দোলন সংগ্রামের জন্য নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত করা। কিন্তু তা না করে যারা বিএনপির মধ্যেই সমালোচনা করছেন, বিএনপির গীবত গাইছেন, বিএনপিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছেন- তাদের নিশ্চয়ই অন্যকোন মতলব আছে। হয়তো তারা বিএনপিকে ভেঙে দিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে যেতে চাইছেন।