জঙ্গি তৎপরতায় ক্রমাগতভাবে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সহায়তা দেয়ার অভিযোগে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সম্প্রতি আইএস- এ যোগদান করা শামিমার নামে একজন নারীর সঙ্গে তারেক রহমানের সম্পৃক্ততায় ব্রিটিশ সরকারের হোম ডিপার্টমেন্ট নড়েচড়ে বসায় দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় হারিয়ে জেল-জরিমানার শঙ্কায় পড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন তারেক। যুক্তরাজ্য কূটনৈতিক সূত্র ও একাধিক ব্রিটেন প্রবাসী বাঙালি সংগঠনের বরাতে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ব্রিটিশ কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, তারেক রহমানের নামে আগেও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করা, অর্থ-সরবরাহ এবং অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ ছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্রিটিশ সরকার একাধিকবার তারেক রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত না হওয়ার লিখিত জবানবন্দি নিয়ে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে তারেক রহমান পাকিস্তান, ইসরাইলের মতো দেশের কূটনৈতিক সাহায্য নিয়ে দেশ দুটির হয়ে অস্ত্র বিক্রি, বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করা, হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ-সরবরাহ করে দেশ দুটির অস্ত্র ও নিষিদ্ধ কেমিক্যাল ব্যবসায় সহযোগিতা করতেন। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এম আই ৬- এর কাছে এমন একাধিক তথ্য ছিল যে, তারেক বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন, ভারতের আসামি সন্ত্রাসী সংগঠন এমনকি সিরিয়ার মতো দেশে কমিশন বাণিজ্যে মাধ্যমে অস্ত্র, অর্থ এবং সন্ত্রাসী জনবল নিয়োগ করতে সহায়তা করেছেন। সম্প্রতি সিরিয়ায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী শামিমার গমন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপের সন্ধান পায় ব্রিটেনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সূত্রগুলো এও বলছে, শামিমার বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে শামিমার একাধিক গোপন বৈঠক ও অর্থ-লেনদেনের খোঁজ পেয়েছে ব্রিটিশ সরকার। লন্ডনে হিলটন হোটেল এবং বারের কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শামিমার সঙ্গে তারেক রহমানের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি তারেক রহমানের পরোক্ষ সহায়তায় শামিমার মতো আরো অন্তত ৭০ জন নারী-পুরুষের সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন, মিশর ও আফগানিস্তানে পাঠানোর তথ্য পেয়েছে ব্রিটেনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে লন্ডনভিত্তিক বাঙালি প্রবাসীদের সংগঠন ‘বন্ধন’ এর সদস্য খাদেমুল ইসলামের বরাতে জানা যায়, শামিমাকে সিরিয়া যেতে সহায়তা করা এবং বিভিন্ন দেশে অস্ত্র বিক্রি, অর্থ সরবরাহ, মানি লন্ডারিং, জঙ্গি রফতানির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। ব্রিটেন সরকার জঙ্গিবাদের মতো ভয়ংকর অভিযোগে তারেক রহমানের উপর কিছুদিন ধরেই নজরদারিতে রেখেছিল। এখন গুঞ্জন উঠেছে, জেল-জরিমানা এবং রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল হওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় তারেক রহমান গা ঢাকা দিয়েছেন। কয়েকদিন যাবত তার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না খোদ দলের নেতা-কর্মীরা। যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাহাবউদ্দিন নিজেই একথা বাঙালি কমিউনিটিতে বলে বেড়াচ্ছেন।