বান্দরবান অফিসঃ-দুঃসময় যেন কাটছেই না বিএনপির। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে গত ছয় মাস ধরে কারাবাস করছেন। অন্যদিকে দলের আরেক প্রধান কর্ণধার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান হত্যা দুর্নীতিসহ একাধিক মামলায় দণ্ডিত হয়ে লন্ডনে পলাতক আছেন গত ১০ বছর ধরে।
এমতাবস্থায় এক প্রকার নেতৃত্ব শূন্যতায় ভুগছে দলটি। ফলশ্রুতিতে দলের সাংগঠনিক অবস্থা একেবারে নাজুক হয়ে পড়েছে। দলের অঙ্গসংগঠনের মধ্যে কমিটি ঘোষণা নিয়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যরূপ ধারণ করছে।
গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জনসমাবেশের আয়োজন করেছিল বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরে দলের সিনিয়র নেতাদের মতবিরোধ ও দলীয় কোন্দলের জের ধরে রাজপথে আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়া দলটি এই জনসমাবেশের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মনোবলসহ সরকারের কাছে একটি বার্তা দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল নেতারা কমিটি ঘোষণা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভায় ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠলে পদপ্রত্যাশী ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী তাদের বাধা দেয়। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পদপ্রত্যাশীরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন, ‘সংগঠনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এখন কোনও নেতৃত্ব নাই, কমিটিও নাই। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদে যারা আছেন তারা সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করেন না। কাজেই এই অবৈধ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে থাকার কোনও অধিকার নেই।
সমাবেশের পরদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে আবারো দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কক্ষে হৈ হট্টগোল সৃষ্টি এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার জন্য রিজভীসহ ওই সময় উপস্থিত সিনিয়র বিএনপি নেতাদের আল্টিমেটাম দেয় ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে পদ প্রত্যাশী নেতারা। এমন ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়েছে দলটির হাইকমান্ড। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। যেসব ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন, ছাত্রদলের সহসভাপতি নাজমুল হাসান, আব্দুল ওহাব, প্রথম যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নুরুল হুদা বাবু, আবুল হাসান, শামছুল আলম রানা, সহসাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিম, আজিজুল হক পাটুয়ারী, ক্রীড়া সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ, সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. শামীম ইকবাল খান, সদস্য মোমিনুর রহমান মালিতা প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। তখন ১৫৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর প্রায় ১৬ মাস পর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের ৭৩৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কমিটির মেয়াদ দুই বছর হলেও এখন পর্যন্ত মেয়াদহীন কমিটি দিয়েই চলছে সংগঠনটি।