অবশেষে চালু হচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি)। চলতি বছরের জুনের মধ্যে চালু হবে চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক এ মেগা প্রকল্প। পিসিটির মাধ্যমেই ১৪ বছর পর নতুন টার্মিনাল পেতে যাচ্ছে দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দর। পিসিটি চালু হলে প্রতি বছর সাড়ে ৪ লাখ টিইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা অর্জন করবে।
ফলে আরও গতিশীল হবে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘পিসিটির সার্বিক কাজ ৯৫ শতাংশের বেশি অগ্রগতি হয়েছে। এখন শেষপর্যায়ের ফিনিশিং চলছে। আশা করি আগামী জুনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমে যাবে পিসিটি।
’ তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০ কনটেইনার হ্যান্ডল করতে পারে বন্দর। পিসিটির মাধ্যমে সেই সক্ষমতা আরও বাড়বে। এতে গতিশীল হবে বন্দরের কার্যক্রম। ’
জানা যায়, পিসিটি নির্মাণের সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৫ শতাংশের বেশি।
যার মধ্যে ফ্লাইওভার, নতুন রাস্তা নির্মাণ, বক্স কালভার্ট নির্মাণ, শোর প্রটেকশন, রিটেইনিং ওয়াল, ওয়ার্কশপ, অফিস বিল্ডিং, সিএফএস শেড নির্মাণের কাজ হয়েছে শত ভাগ। কনটেইনার জেটি, ডলফিন জেটি অন্যান্য কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরই মধ্যে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতিতে প্রকল্পটির জন্য আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি অপারেটর নিয়োগের জন্য ‘ইকুইপ, অপারেট অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স অব পিসিটি অন পিপিপি মডেল’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে টার্মিনাল অপারেশন পরিচালনা ও বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়েছে আন্তর্জাতিক বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। যার মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল, দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ড, ভারতের আদানি পোর্ট অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড ও সিঙ্গাপুরের পিএসএ।
দেশের আমদানি-রপ্তানির বাণিজ্যের ৯২ শতাংশেরও বেশি হ্যান্ডলিং হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। বর্তমানে জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি), চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ও নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নামের তিনটি টার্মিনালে মোট ১৯টি জেটি রয়েছে। এ ছাড়া তেল খালাসের জন্য রয়েছে চারটি ডলফিন জেটি। ধারণা করা হচ্ছে ২০৩১ সালে ৫৮ লাখ ১৯ হাজার টিইউএস ও ২০৪৩ সালে ৭৫ লাখ ৯৭ হাজার টিইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করবে চট্টগ্রাম বন্দর।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের সক্ষমতা বাড়াতে পিসিটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। টার্মিনালটি পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে গেলে একসঙ্গে তিনটি জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর সুবিধা থাকবে। এতে বছরে সাড়ে চার লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা যাবে। এ ছাড়া তেলবাহী জাহাজ ভেড়ানোর সুবিধাও থাকবে। সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশের দৈর্ঘ্য) এবং ১৯০ মিটার জাহাজ ভেড়ানো যাবে এই টার্মিনালে। পিসিটি নির্মাণ বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী।