বাঙালি জাতির গৌরব ও অহংকারের নাম হচ্ছে ৭১। বাঙালি জাতিসত্ত্বা ও অস্তিত্ব যতদিন আছে ঠিক ততদিন থাকবে ৭১। বাংলাদেশ নামের পিছনের মূল মেরুদণ্ড হলো ৭১। ৭১ বলে ইতিহাসের কথা, ৭১ সাক্ষ্য দেয় ঐতিহ্যের কথা, ৭১ মনে করিয়ে দেয় স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা। আর সেই ৭১ এ পা রাখলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। যার পথচলা ১৯৪৮ সাল থেকে। ১৯৪৮ সালের আজকের এই দিনে (৪ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। বিদ্যার সঙ্গে বিনয়, শিক্ষার সঙ্গে দীক্ষা, কর্মের সঙ্গে নিষ্ঠা, জীবনের সঙ্গে দেশপ্রেম এবং মানবীয় গুণাবলির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পদার্পণ করলো পথচলার ৭১ বছরে।
জন্মলগ্ন থেকেই ছাত্রদের অধিকার আদায়ে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও জনগণের স্বার্থে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে ছাত্রলীগ। ইতিহাসই তার সাক্ষ্য দেয়। ৫১’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগের ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় সমুজ্জ্বল।
বিশ্বের বৃহৎ রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন থেকেই জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আজকের অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা। বাংলা এবং বাঙ্গালীর সাত দশকের সংগ্রাম, স্বপ্ন এবং সাহসের সারথী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রথম আহবায়ক ছিলেন নাঈমুদ্দিন আহমেদ। সাংগঠনিকভাবে কার্যক্রম শুরু করার পর এর প্রথম সভাপতি মনোনীত হন দাবিরুল ইসলাম। এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খালেক নেওয়াজ খান।
১৯৭৫ পরবর্তী বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভাগ্যাকাশ যে কালো মেঘ গ্রাস করেছিল, সেই মেঘ সরাতে প্রত্যাশার সূর্য হাতে ১৯৮১ সালে প্রত্যাবর্তন করলেন আমাদের প্রাণের নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। সেদিন প্রিয় নেত্রীর পাশে ভ্যানগার্ডের ভূমিকায় ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সামরিক শাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ১৯৮৩ সালে শিক্ষা আন্দোলন ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের ১০ দফা তৈরিতে নেতৃত্ব দেয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শিক্ষার অধিকার প্রসারে শামসুল হক ও অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর কমিশনের রিপোর্ট তৈরিতে ছাত্র সমাজের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ।
ঐতিহ্যবাহী এই ছাত্র সংগঠনটি বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা অর্জনে যেমন ভূমিকা রেখেছে তেমনি স্বাধীনতার গৌরব রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের আন্দোলনে সবসময়ই অগ্রভাগের সেনানীর ভূমিকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। নানান গৌরব আর সাফল্যের পাশাপাশি রক্তভেজা ইতিহাসও কম নয় এই সংগঠনটির। বিগত অন্যান্য সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন নিপীড়ন আর দাবি আদায়ের বিভিন্ন আন্দোলনে এই সংগঠনের প্রায় ১৮ হাজার কর্মী প্রাণ হারিয়েছে।জন্মের প্রথম লগ্ন থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের ছয় দশকের সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.