একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে গণ শুনানি কর্মসূচি পালন করবে তাতে প্রধান বিচারক হিসেবে থাকবেন জোটের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে জোটের নেতা ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এদিকে গণশুনানির প্রধান বিচারক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিএনপি। সব কিছুতে ড. কামালকে প্রধান করায় বিএনপির রাজনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলেও মনে করছেন দলটির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য। বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে অসন্তোষের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা গেছে।
গণশুনানির প্রধান বিচারক নিয়োগ করার বিষয়ে আবদুর রবের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট করা হয়েছে বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে। শুরুতেই বলা হয়েছিল যে প্রতিটি সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিএনপিকে জানাতে হবে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে গণশুনানির বিচারক নির্ধারণী সভায় বিএনপির কাউকে নিমন্ত্রণ দেয়া হয়নি। এগুলো ভালো কোনো আলামত নয়। আ স ম রব এসব ঘোষণা দেয়ার কে? তার তো অধিকার নাই গণশুনানির বিচারক নিয়োগ দেয়ার। শুনেছি ড. কামালও জানেন না বিচারক প্রসঙ্গে। আ স ম রবের তো এত বাড়াবাড়ি করা উচিত না। বিএনপি এখনও নিঃশেষ হয়ে যায়নি যে এতটা অবজ্ঞা সহ্য করতে হবে। আর বিএনপিতে কি বিজ্ঞ কোনো আইনজীবী নেই যে ড. কামালকেই সব কিছুর প্রধান বানাতে হবে? রবের এমন দুঃসাহসে মনে হচ্ছে আমরা আইনের কিছুই জানি না। সব কিছুতে `তালগাছ আমার’ নীতি মেনে চললে তো জোটবদ্ধ রাজনীতি করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বিষয়টি ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, রব সাহেব তো খারাপ কিছু বলেননি। বয়স ও মেধার ভিত্তিতে গণশুনানিতে ড. কামালকে প্রধান বিচারক করা হয়েছে। এতে বিএনপি নেতারা ক্ষুব্ধ কেনো? বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। ড. কামালের কারণে আজকে বিএনপি প্রেস ক্লাব আর বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে। কৃতজ্ঞতা বোধ থেকেও তো বিএনপি নেতাদের এমন উদ্ভট আপত্তি তোলা উচিত নয়।
কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে মান্না আরো বলেন, উপকারী গাছের যে ছাল থাকে না, এই প্রবাদ আবারও সত্য প্রমাণ করল বিএনপি। ড. কামাল গণশুনানির বিচারক হলে বরং দেশবাসী তার রায়কে মূল্যায়ন করবে। সরকারও দাবি-দাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক বিবেচনা করতে পারে। কিন্তু দুর্নীতিবাজ ও বিতর্কিত নেতা এমন গুরুত্বপূর্ণ গণশুনানির বিচারক হলে এটি গ্রহণযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা হারাবে। এতটুকু বোধ হয়নি বিএনপি নেতাদের। জনগণ না চাইলে নেতা হওয়া যায় না। মাঠের রাজনীতিতে সুবিধা করতে না পারায় এখন জোটের রাজনীতিতে প্রাধান্য বিস্তার করার চেষ্টা করছে বিএনপি। এগুলো জোটের রাজনীতির জন্য ভালো লক্ষণ নয়।
এই বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রাগান্বিত স্বরে বলেন, কে বিচারক হবেন আর কে আসামি হবেন, সেটি নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় আমার নেই। আমরা রাজনীতি করতে এসেছি, পুতুল খেলায় কে রাজা হবে আর কে মন্ত্রী হবে সেটি নির্ধারণ করতে নয়। বিচারক নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন বা যিনি বিচারক হওয়ার বাসনা পোষণ করছেন, তারা অলস মস্তিষ্কের মানুষ। রাজনীতি বাদ দিয়ে পদনীতির চর্চা করলে এমন উদ্ভট ও যুক্তিহীন বিষয় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিএনপি নেতাদের রাজনীতি করতে হলে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.