ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, রক্তের হোলিখেলা গণতান্ত্রিক দেশে বরদাস্ত করা হবে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী একা নন, সমগ্র দেশবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর সঙ্গে আছে। আমরা ভয়কে অতিক্রম করব। সবাই মিলে আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শনকালে ভাংচুরকৃত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব ভবন পরিদর্শন শেষে প্রেস ক্লাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে এবং বিকাল সাড়ে ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সার্কিট হাউসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা আমাদের ৭১-কে মনে করিয়ে দিয়েছে। তারা ওই দিন নারায়ণগঞ্জে সৌরভ নামে এক সাংবাদিককে ধরে ৪ কলেমা পড়িয়ে সে মুসলমান কিনা নিশ্চিত হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ঘৃণা প্রকাশের ভাষা আমাদের নেই। আমি চাই সবার মাঝে শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৭৪টি মাদ্রাসা আছে। এসব মাদ্রাসায় ১ লাখ ৩ হাজার ছাত্র আছে। তাদের ভরণপোষণ বাবদ বছরে খরচ হয় ৩৬০ কোটি টাকা। এই টাকা বহন করছেন আপনারা ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। আপনারা তাদের খেদমত করছেন। খেদমত করতে এখন প্রতিশোধের শিকার হচ্ছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের স্পেশাল শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, শহরের বিভিন্ন স্থানে থাকা বঙ্গবন্ধুর একাধিক ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষাচত্বর, রেলওয়ে স্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, পৌর মেয়রের বাসভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, সড়ক ও জনপথ কার্যালয়, গণপূর্ত অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, সার্কিট হাউস, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, মাতৃসদন, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের কার্যালয়, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কালীবাড়ি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, তার শ্বশুরের বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।