বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। জামিনের আবেদন খারিজ করার আইনি প্রভাব সুদূরপ্রসারী বলেই আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হওয়ার আপাতত কোনো সম্ভাবনা নেই।
জেলকোড এবং বিভিন্ন আইনজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই রায়ের ফলে যদি বেগম খালেদা জিয়ার কোনো নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি না হয় তবে স্বাভাবিক নিয়মে ২০২৫ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত কারাভোগ করতে হবে। এটি হলো ন্যূনতম সাজার মেয়াদ।
এদিকে এমন বাস্তবতায় কোনো সুদৃঢ় আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করতে না পারায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি চরম অসন্তুষ্ট হয়েছেন। মূলত আত্মবিশ্বাসী হয়ে নির্বাচনে যাওয়ার পর হেরে যাওয়া, অতঃপর আন্দোলনের ঘোষণা না দিয়ে চুপ করে বসে থাকায় দলের হাইকমান্ড নিয়ে প্রচণ্ড বিরক্ত তিনি।
১২ ডিসেম্বর আদালতে জামিনের মামলা খারিজ হবার পর খালেদা জিয়া সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে গেলে তিনি পরিবারের সদস্যদের বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুধু আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য নয়, দলের হাইকমান্ড ও তৃণমূলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি নিয়েও নেতাদের প্রতি ক্ষোভ রয়েছে তার। বেগম জিয়া মনে করছেন, বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা ক্ষমতায় নিজের শক্তিশালী অবস্থান তৈরির জন্য খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দিতে পারে। এছাড়া ২০ দলকে বাদ দিয়ে আদর্শচ্যুত ড. কামালের সঙ্গে জোট করাও পছন্দ নয় বিএনপি চেয়ারপারসনের।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শুনলাম- বেগম খালেদা জিয়া তার পরিবারের সদস্যদের কাছে আমাদের বিভিন্ন সিনিয়র নেতাদের গালমন্দ করেছেন। যা দুঃখজনক। বিশেষ করে তিনি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ওপর বেশি ক্ষিপ্ত। কিন্তু ম্যাডাম হয়তো বুঝতে পারছে না, আইনের কাছে বেআইনিরা বেকায়দায় থাকে। তাই বলতেই হচ্ছে, খালেদা জিয়া যদি বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে যায়, তবে আমরা নিজেরাই বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে ফেলবো। এরপর এই বিএনপিতে শুধু তিনি এবং তার সন্তান তারেক রহমান থেকে যাবেন। তারপর দেখা যাবে- কিভাবে বিএনপি চলে।