প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন করতে গিয়ে তারেক রহমানের বাধার মুখে পড়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদের মতো একাধিক নেতা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট রচনাকারী বঙ্গবন্ধু ও তার ঐতিহাসিক ভাষণের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পরামর্শে প্রথমবারের মত ৭ই মার্চে ক্ষমতাসীনদের সমর্থন দেয়ার প্রয়াসে অযাচিতভাবে মাথা ঘামানোয় তারেকের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন মির্জা ফখরুলরা।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রের বরাতে জানা যায়, নিজেদের অতীত ভুল ও প্রতিহিংসার রাজনীতি ভুলে বেগম জিয়ার পরামর্শে প্রথম বারের মতো দিবসটি উদযাপন করার মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল, মওদুদ আহমেদের মতো সিনিয়র নেতারা। তারা ভেবেছিলেন, ৭ই মার্চ উদযাপন করে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে সমর্থন জানিয়ে বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়ের জটিলতা দূর করতে সমর্থ হবেন। বেগম জিয়াও দীর্ঘ এক বছরের বেশি কারাবাস জীবনে নিজের অতীতের একরোখা রাজনীতি ও আওয়ামী বিরোধী মনোভাবের বিষয়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরে মির্জা ফখরুলকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে আওয়ামী লীগের অবদান মেনে নেয়ার আদেশ দিয়ে পরবর্তী সকল জাতীয় দিবস ঘটা করে পালন করার পরামর্শ দেন। সেই মোতাবেক মির্জা ফখরুলরা ৭ই মার্চ উদযাপন করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দর্শনকে সমর্থন দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝখানে বাধ সাধেন তারেকপন্থী নেতা রিজভী আহমেদ। মির্জা ফখরুলদের এমন পরিকল্পনার বিষয়টি ৫ মার্চ রাতে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে তারেক রহমানকে অবগত করেন রিজভী।
এরপর, রিজভী আহমেদের সংবাদে রাগান্বিত হয়ে ৫ মার্চ রাতেই ফোন করে মির্জা ফখরুল ও মওদুদ আহমেদকে ৭ই মার্চ উদযাপন না করার কড়া নির্দেশ দেন তারেক। ৭ই মার্চকে বিএনপির জন্য পরিত্যাজ্য ঘোষণা করেন তারেক। তার নির্দেশনা অমান্য করে অনুষ্ঠান করলে পদ কেড়ে নেয়া এবং শায়েস্তা করার মতো অপমানজনক হুমকিও দিয়েছেন তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এমন হিংসাত্মক হুমকিতে তাই আপাতত ৭ই মার্চ কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি না দেয়ার ঘোষণা দিয়ে আপাতত রোষানল থেকে বেঁচেছেন মির্জা ফখরুলরা। কিন্তু যেভাবে মির্জা ফখরুল-মওদুদরা দিন দিন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করছেন তাতে আর ক’দিন পদ নিয়ে রাজনীতি করতে পারবেন সেটি নিয়ে ভীতি ও গুঞ্জন শুরু হয়েছে বিএনপির রাজনীতিতে।