কোভিড-১৯ টেস্ট পদ্ধতি উদ্ভাবনের পর থেকেই সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা পেয়ে আসছে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সর্বশেষ টেস্ট পদ্ধতির জন্য তৈরি স্যাম্পলের যথার্থতা যাচাই করার জন্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর রক্তের যে নমুনা চেয়েছিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, সেটিও পৌঁছে দিয়েছে সরকার। জাতীয় রোগতত্ত্ব ও রোগনিয়ন্ত্রণ ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) রাতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে রক্তের নমুনা সরবরাহ করে।
জানতে চাইলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বুধবার রাতে (৮ এপ্রিল) সারাবাংলাকে বলেন, ‘হ্যাঁ, আইইডিসিআর গত রাতেই রক্তের নমুনা পাঠিয়ে দিয়েছে। আমাদের পাঁচ জন কোভিড-১৯ রোগীর পাঁচ শিশি রক্ত প্রয়োজন ছিল। সেটা ওরা পাঠিয়ে দিয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে করোনাভাইরাস টেস্ট পদ্ধতির স্যাম্পল তৈরির জন্য ব্যবহৃত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ল্যাবরেটরি এবং এর কার্যক্রম পরিদর্শন করতে যায় বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসনের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। পরিদর্শন শেষে দ্রুততার সঙ্গে ইতিবাচক রিপোর্ট জমা দেয় তারা। আর রাতের মধ্যেই আইইডিসিআর পৌঁছে দেয় রক্তের নমুনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শুরুর দিকে কিছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে গত ১৮ মার্চ দ্রুততার সঙ্গে রিএজেন্ট আমদানির অনুমোদন দেয় ওষুধ প্রশাসন। সেই অনুমোদন পাওয়ার পর ইংল্যান্ডের দ্য ন্যাটিভ অ্যান্টিজেন কোম্পানির (THE NATIVE ANTIGEN COMPANY) কাছ ১০ ধরনের ১০০ কেজি রিএজেন্ট আমাদানির এলসি খোলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ইংল্যান্ড থেকে রিএজেন্ট আনা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
অবস্থা বেগতিক দেখে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে চীন থেকে রিএজেন্ট আনার সিদ্ধান্ত নেন গণস্বাস্থ্যের বিজ্ঞানীরা। এর জন্য ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন, নতুন করে এলসি খোলা, আকাশ পথে রিএজেন্ট আনার ব্যাপারে এভিয়েশন পারমিট— সব ব্যাপারেই পূর্ণ সহযোগিতা দেয় সরকার।
বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের সরাসরি হস্তক্ষেপে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিজে উপস্থিত থেকে রিএজেন্টগুলো ঢাকার বিমানে তুলে দেন। ৫ এপ্রিল সকাল ৮টায় বিমানটি ঢাকায় পৌঁছানোর পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নিজে উপস্থিত থেকে দ্রুততার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে রিএজেন্টগুলো গণস্বাস্থ্যের বিজ্ঞানীদের হাতে তুলে দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, চীন থেকে রিএজেন্ট আসার পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানী রোববার থেকেই কোভিড-১৯ টেস্ট পদ্ধতির স্যাম্পল তৈরির কাজ শুরু করেছেন। ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী দিন/রাত সেখানে কাজ করছেন। আগামী ১১ এপ্রিল ১০ হাজার স্যাম্পল তৈরির কাজ শেষ করবেন তারা। ওই দিন স্যাম্পলগুলো তুলে দেবেন সরকারের হাতে।
এর আগে, মার্চের মাঝামাঝি এই উদ্ভাবনের কথা শোনার পর ড. বিজন কুমার শীলকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৮ মার্চ তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ছিল গণভবনে। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে হঠাৎ সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। কোয়ারেনটাইন বা সঙ্গনিরোধ নীতি অনুসরণ করায় শেষ পর্যন্ত তাদের সাক্ষাৎ হয়নি। ড. বিজন কুমার শীল ওই সময় সারাবাংলাকে বলেছিলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া প্রধানমন্ত্রী কারও সঙ্গে দেখা করছেন না। স্যাম্পল তৈরির পর পুরো টিম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব।’
সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে আমরা এখন পূর্ণ সহযোগিতা পাচ্ছি। চীন থেকে রিএজেন্ট আমদানির ব্যাপারে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছেন, তাতে আমরা খুবই খুশি হয়েছি। ওষুধ প্রশাসনের একটি টিম এসে আমাদের ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করে গেছে। আইইডিসিআর করোনা আক্রান্ত রোগীর রক্তের নমুনা পাঠিয়েছে। সবাই আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে কাজ করছে। এভাবে সব কিছু চলতে থাকলে বর্তমান সংকট আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট কেভিড-১৯ নামক প্রাণঘাতী রোগ নিয়ে গোটা বিশ্ব যখন দিশেহারা, ঠিক তখন একটি ‘ভালো খবর’ দেয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা জানান, সহজ পদ্ধতি ও সুলভ মুল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তারা। যে পদ্ধতিতে প্রতি মাসে অন্তত এক লাখ লোকের কোভিড-১৯ টেস্ট করা যাবে।
তথ্য সুত্র:-(সারাবাংলা ডটনেট)
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.