প্রধানমন্ত্রী গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাস্যরসাত্বকভাবে বলেছিলেন, ‘অসময়ে’ নীরব, সুসময়ে সরব, তিনি হলেন আ স ম রব’ । জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি, কথিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম এই নেতা আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচন করছেন। সময়ে অসময়ে বিভিন্নভাবে আলোচিত এই নেতা রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে ব্যাক্তিস্বার্থ আদায়ে সবসময় সচেষ্ট থাকেন বলে জনশ্রুতি আছে।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে সরকারের নৌ পরিবহন মন্ত্রীর পদ বাগিয়ে নেন এই নেতা। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের পক্ষে কাজ করলেও তা ছিল একেবারেই ব্যাক্তি স্বার্থে। রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে খুব স্বল্প সময়ে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার পাহাড়। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করা এই নেতা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বিএনপি-জামায়াতের সাথে যোগ দিয়েছেন মন্ত্রী হয়ে আবারো কোটি টাকার পাহাড় গড়ার আশায়।
লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট আদায়ের কৌশলে যুক্ত হয়েছেন আ স ম রবের স্ত্রী তানিয়া রব। বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোসহ সাজানো হামলা, ভাঙচুর ঘটিয়ে নির্বাচনী পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। কিছুদিন আগে নিজ নির্বাচনী অফিসে তালা দিয়ে আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তানিয়া রব। যা পরবর্তী যথাযথ তথ্য প্রমাণ দ্বারা পরবর্তীতে তানিয়া রবের মুখোশ উন্মোচন করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার উত্তরা কামারপাড়ায় ২০ বিঘা জমিতে থাকা বাগানবাড়ি, বনানী, মিরপুর, ওয়ারী ও যাত্রাবাড়ীতে থাকা ১৮ টি ফ্ল্যাট থেকে আয়কৃত অর্থ ও সিঙ্গাপুর সিটিতে থাকা এক হাজার ২০০ কোটি টাকা থেকে এবারের নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোট ক্রয়ে ব্যয় করছেন আ স ম রব। এমপি থাকাকালীন সময়ে এই পাহাড়সম টাকার একটি বিরাট অংশ ব্যয় করছেন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মাধ্যমে নীতিবাচক চিত্র প্রচারে।
এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপির শরীকেরা পোস্টার, ব্যানার বা অন্য কোনো প্রচার উপকরণে দলীয় প্রধান হিসেবে খালেদা জিয়ার ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না। বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে বিএনপিকে চিঠি দেয়ার পরও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে খালেদা জিয়ার ছবি ব্যাক-ডেট দিয়ে ব্যবহার করছেন তানিয়া রব। নির্বাচন কমিশন থেকে “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পোস্টার বা ব্যানারে নিজের ছবি ও প্রতীক ছাড়া অন্য কোনো ছবি ছাপাতে পারবেন না। কোনো প্রার্থী নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে তিনি নিজের ছবি ও প্রতীকের পাশাপাশি দলীয় প্রধানের ছবি ছাপাতে পারবেন” মর্মে চিঠি দেয়া হলেও নির্বাচন কমিশনের বিধি অমান্য করে এসব পোস্টার ছাপাচ্ছেন আ স ম রব ও তার স্ত্রী তানিয়া রব। রামনগর-কমলনগরের সর্বত্র খালেদা জিয়ার ব্যাক-ডেট দিয়ে আ স ম রবের নির্বাচনী পোস্টার দেখা গেছে।