দেশের তরুণ সমাজের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে পর্ন সাইট বন্ধের জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। সম্প্রতি পাঁচ দফায় চার হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইট বন্ধ করেছে টেলিযোগাযোগের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। আর এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ব্যান্ডউইথ ব্যবহারে।
জানা গেছে, অনলাইন দুনিয়ায় দুই কোটির বেশি পর্ন সাইট ও লিংক রয়েছে। চার হাজারের বেশি সাইট বন্ধ করায় এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এগুলো দেখার হার কমেছে।
এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা শুধু পর্ন সাইট বন্ধ করিনি, অনলাইনের জুয়ার অনেক সাইটও বন্ধ করেছি। আমরা যেকোন মূল্যে ইন্টারনেট সেবাকে নিরাপদ রাখতে চাই। শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেটের কোনও বিকল্প নেই। ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে আমরা প্রয়োজনে কঠোর অবস্থানে যাব।
এদিকে, দেশে বর্তমানে ১ হাজার ১০০ জিবিপিএস (গিগাবিটস পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) প্রতিষ্ঠান বিডি হাবের প্রধান নির্বাহী আমিনুল হাকিম।
জানা যায়, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে দেশে ব্যবহার হতো ৩৫০ জিবিপিএস এর ২০ শতাংশ বা ৭০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হতো পর্নোগ্রাফি দেখায়। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, পর্ন সাইট বন্ধের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়িয়ে, পারিবারিক মূল্যবোধ তৈরি করে, স্কুল কলেজে এ বিষয়ে নৈতিক শিক্ষা দিয়ে এসব থেকে তাদের ফেরানো যেতে পারে। এছাড়া পর্নোগ্রাফি ছাড়াও যে ইন্টারনেটে আরও মজার এবং শিক্ষণীয় বিষয় আছে সেসব বিষয়ে ছোট থেকেই শিক্ষার্থীদের বোঝাতে পারলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত কনটেন্ট, ছবি ও ভিডিও থাকার অভিযোগে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে বন্ধ করা হয় ৫৬০টি ওয়েবসাইট। একই ধরনের অভিযোগে বন্ধের প্রক্রিয়ায় ছিল আরও কিছু দেশি-বিদেশি ওয়েবসাইট। সর্বশেষ এ বছরই বন্ধ করা হলো চার হাজারের বেশি পর্ন ও জুয়ার ওয়েব সাইট।
দেশে ইন্টারনেট সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হকের কাছে পর্ন সাইট বন্ধের সিদ্ধান্তের সুফল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করে দেখেছি রাতে ৭০ ভাগ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হয় পর্নোগ্রাফি দেখায়। আর দিনের বেলা তা গিয়ে দাঁড়ায় পাঁচ ভাগে। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে সম্প্রতি পর্নোগ্রাফি দেখার হার অনেক কমেছে।