অনশন কর্মসূচিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দলীয় নেতাদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি নিয়ে বিএনপির টানাপড়েন থামছেই না। এবার দলীয় চাঁদাবাজির নিষ্ঠুর বলি হলেন রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির সভাপতি হাজী দুলাল।
গোপন সূত্রে জানা যায়, নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর প্রেক্ষিতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই জেরে উত্তরা পশ্চিম থানা কমিটি বাতিলও করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির দফতর সম্পাদক এবিএম রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হাজী দুলালকে বহিষ্কারের তথ্য জানানো হয়।
যদিও বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের কারণটি আড়াল করা হয়েছে। বলা হয়েছে, গত ৭ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক জরুরি সভায় সম্পৃক্ত না থাকায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে হাজী দুলালকে দল থেকে বহিষ্কার করে উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির কমিটিও বাতিল করা হলো।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বেশকিছু কর্মসূচিতে একের পর এক নেতাদের কাছে অর্থ আদায় করার প্রেক্ষাপটে এক ধরণের চাপা ক্ষোভ তৈরি হয় নেতাদের মাঝে। যা সর্বশেষ ৭ এপ্রিল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির গণ-অনশন পালন সংক্রান্ত কর্মসূচিতে এসে নেতাদের চাপা ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। সাধারণ একটি কর্মসূচিতে নেতাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করা হয়। এ নিয়ে মির্জা ফখরুল, খন্দকার মোশাররফসহ বেশকিছু নেতাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির ঘটনাও ঘটে। নেতারা প্রশ্ন তোলেন- এমন ছোট কর্মসূচির জন্য ৫ লাখ টাকা করে চাওয়ার মানে কী?
এদিকে হাজী দুলালের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় ২৮ জন নেতার তালিকা করে জনপ্রতি ৫ লাখ ও ব্যক্তি ভেদে ২ লাখ টাকা করে চাঁদা নির্ধারণ করা হয়। এ নিয়ে বিরোধিতা করেন হাজী দুলাল। টাকা দিতেও অস্বীকৃতি জানান। এমনকি এ বিষয় নিয়ে একটি জরুরি সভা ডাকা হলেও সেখানে অনুপস্থিত থাকেন দুলাল। এমন প্রেক্ষাপটেই তাকে বহিষ্কার করা হলো। এ নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার নেতাদের মধ্যে এক ধরণের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বলেও জানান তিনি। দল করতে এসে চাঁদাবাজদের খপ্পরে পড়লে, আগামীতে নেতা-কর্মী খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।