করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসহ জরুরী সেবা সহজলভ্য করতে দেশের ডিজিটাল ম্যাপ সমৃদ্ধকরণের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। এর ফলে ম্যাপ দেখেই বাসার পাশের ফার্মেসী, চিকিৎসা কেন্দ্র, সুপারমার্কেট, মোবাইল রিচার্জ পয়েন্টের অবস্থান ও তা খোলা থাকার সময়সূচী জানা যাবে। একাজে দেশের তরুণদের পাশে চান সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক ভিডিও প্রেস কনফারেন্সে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গুগল ম্যাপস এবং ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ আরও সমৃদ্ধ করতে আইসিটি বিভাগ, এটুআই ও গ্রামীণফোন যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই ক্যাম্পেইন শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কেন্দ্র, ফার্মেসি, সুপারমার্কেট, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান, মোবাইল ফোন রিচার্জ ও ক্যাশ আউট পয়েন্টগুলোর অবস্থান এবং তাদের সেবা দানের সময়সূচী জানা থাকা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্যসেবা পরিকল্পনাকারী এবং সম্মুখভাগে থাকা কর্মীদের জন্য পরবর্তী আইসোলেশন সেন্টার ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করার সুবিধার্থে এসব তথ্য জানা থাকা প্রয়োজন। এছাড়াও, জরুরি খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত এজেন্টদের সব রাস্তা ভালো করে জানা দরকার।
তারা জানান, জনপ্রিয় গুগল ম্যাপস এবং ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে বাংলাদেশের শহর অঞ্চলগুলো অধিক প্রাধান্য পেয়েছে। ম্যাপে দেশের গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ স্থাপনাগুলো নির্দিষ্ট করা হয়নি। এর ফলে গ্রামাঞ্চলের নাগরিক, স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি এবং ই-কমার্স ডেলিভারি এজেন্টরা ম্যাপ দেখে নির্দিষ্ট স্থান খুঁজে বের করতে সমস্যায় পড়ছেন। এ সমস্যা দূর করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে আগ্রহী যে কোনও স্বেচ্ছাসেবক bangladeshchallenge.com এবং corona.gov.bd এ নিবন্ধন করতে পারেন। এই ক্যাম্পেইন ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।
ভিডিও কনফারেনসে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে উদ্ভূত এই সংকটময় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ কাটিয়ে ওঠার জন্য বাংলাদেশ সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এই সংগ্রামে সফল হওয়ার জন্য সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করি। আমি গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এবং অন্যান্য করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানাই।
তিনি আরও বলেন, গুগল ম্যাপস এবং বাংলাদেশের ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ আরও সমৃদ্ধ হলে জরুরি পরিস্থিতিতে দেশের জনগণকে নিকটস্থ হাসপাতাল ও ফার্মেসি খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গুগল ম্যাপ এবং ওপেন স্ট্রিট ম্যাপকে আরও সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে জরুরি কাজে নিয়োজিত নাগরিক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং ই-কমার্স ডেলিভারি এজেন্টদের সহযোগিতা করার জন্য আমি দেশের উদ্যমী তরুণদের আহবান জানাচ্ছি। তরুণরা তাদের বাড়িতে বসে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই এই ম্যাপিং কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন।
গ্রামীণফোন এর প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সমগ্র পৃথিবী আজ একত্রিত হয়েছে। আমরা প্রত্যেকেই, বিশেষ করে তরুণরা, বাড়িতে বসেই যার যার অবস্থান থেকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই সংগ্রামে অংশ নিতে পারি। আমরা বিশ্বাস করি, যারা অসহায় পরিস্থিতিতে আছেন তাদের কাছে দরকারি তথ্য পৌঁছে দিতে এই কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রেস কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন প্রেনিউর ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আরিফ নিজামি ও গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশারসহ আরও অনেকই।