করোনা নিয়ে সরকারের প্রস্তুতি আছে বলেই মুজিববর্ষের মতো অনুষ্ঠানকে কাঁটছাট করা হয়েছে। এখানে সরকারের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার ঘাটতি খোঁজার সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। করোনা নিয়ে এই মুহূর্তে বিএনপিকে রাজনীতি না করার অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমন্ডলীর সঙ্গে এক যৌথসভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মুজিববর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনি কর্মসূচির পুনর্বিন্যাস ও সমসাময়িক ইস্যুতে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় সংসদ সদস্য ও দুই সিটি মেয়রদের সাথে এক যৌথসভা আহ্বান করা হয়।
কাদের বলেন, মুজিববর্ষের মতো এরকম আয়োজন জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান পর্যন্ত স্থগিত করে পুর্নঃবিন্যাস করা হয়েছে। তার সরকারের সবচেয়ে বেশি আন্তরিকতা সদিচ্ছার প্রমাণ এটাই। সরকারের সদিচ্ছা, আন্তরিকতায় যারা ঘাটতি খোঁজে, যারা সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে এ ধরনের অপপ্রচার করে, আমি মনে করি তারা হীন রাজনৈতিক উদ্দেশে এটা করছে। আমরা এ ধরনের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে আবারও তাদেরকে অনুরোধ করছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা বলছেন সরকার করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল না। তাদের বলতে চাই, করোনা ভাইরাসের উপস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যে দেশ সবার আগে প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র থেকে শুরু করে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগসহ যারা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব জায়গাতেই সমুদয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
‘ইতালি থেকে যে দুইজন প্রবাসী বাংলাদেশি এসেছেন, প্রস্তুতি আছে বলেই তাদের সংক্রমণের ব্যাপারটা ধরা পড়েছে এবং তাদের ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদের দুজন থেকে আরেকজন সংক্রমিত হয়েছে, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন কেউ আমাদের এখানে জানা (সংক্রামণ) নেই এবং সরকার সার্বিকভাবে প্রস্তুত আছে। যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নামক সংগঠনটি আজকে আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ। তারা আইনি লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়ে খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজনীতি করে বেড়াচ্ছে। রাজনীতির ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়েও তারা তাদের সেই নিকৃষ্ট রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছে।
‘আমি তাদেরকে অনুরোধ করবো, এ ধরনের একটা মানবিক ও সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে যেন রাজনীতি থেকে বিরত থাকে, সব বিষয়েই রাজনীতি করা উচিত না। এখন আমাদের সবার উচিত জাতীয়ভাবে এই বিষয়টি কিভাবে আমরা মোকাবিলা করবো সে ব্যাপারে সহযোগিতা করা।’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি’র রাজনীতির সমালোচনা করে কাদের আরও বলেন, রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিএনপি জাতীয় ইস্যুতে কর্মসম্পর্ক নষ্ট করেছে। অন্য কোনো ব্যাপারে আমাদের মধ্যে কোনো কর্মসম্পর্ক পর্যন্ত নেই। এমন পরিস্থিতি বিএনপি বাংলাদেশে ১৫ আগস্টের পর থেকে সৃষ্টি করেছে। ২১শে আগস্টে সেই কর্মসম্পর্কের অলঙ্ঘনীয়তা প্রাচীরটিকে তারা আরো উঁচু করে ফেলেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে কর্মের যে একটা সম্পর্ক থাকা উচিত, সেখানে একটা অলঙ্ঘনীয় দেয়াল তারা তুলে ফেলেছে এবং এই দেয়ালটিকে ক্রমেই তারা আরো উঁচু করছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান,যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপসহ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।