৩০ ডিসেম্বর ২০১৮। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। আর আওয়ামী লীগ সরকার মানেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নির্ভয়ে জীবনযাপন করা। নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যেয়ে ভোট প্রদান করা। আর আওয়ামী লীগ’ই এমন একটি দল যাদের শাসনামলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারছে। এটাই এমন একটি সরকার যাদের শাসনামলে সব ধর্মের মানুষ সমান মর্যাদা পায়।
এদিকে ২২ তারিখ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটে ‘অনিয়মের’ অভিযোগ শুনতে প্রায় ‘৫০০’ জন নেতা-কর্মী নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গণশুনানির এক বক্তব্যে বিএনপির এক নারী নেত্রী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে ভোট শুরু হওয়ার ঘন্টাখানেক আগে থেকেই আওয়ামী লীগ ভোট কাটা শুরু করেছে। নির্বাচনের দিন তারা আমার আসনের অন্তত ২২ থেকে ২৩টি কেন্দ্রের ভোট কেটেছে। তারা আমার প্রত্যেকটি কেন্দ্রের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। যারা এর বিরোধিতা করেছিল তাদেরকে নির্মমভাবে মেরে হত্যা করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার একটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থক একজন ভোটার কেন্দ্রে ঢুকে ধানের শীষে ভোট দিয়েছিল। এই কারণে তাকেও নির্মমভাবে মারা হয়েছিল। শুধুমাত্র একজন ভোটার সেই কেন্দ্রে ভোট দিতে পেরেছিল। এরপর সেই কেন্দ্রে ওই একজন ভোটার ছাড়া আর কোনো ভোটার ঢুকতে পারে নাই।’
তবে এই নেত্রী তার বক্তব্যে ভোটের দিনে কেন্দ্রে এজেন্ট বের করে দেওয়ার ব্যাপারে জানালেও নির্বাচনের দিন পর্যন্ত দেশের বেশিরভাগ কেন্দ্রেই এজেন্ট দিতে পারেনি বিএনপি। ৩০ তারিখ ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্রে দেখা যায় স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছে ভোটাররা। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির কোনো জনসমর্থন না থাকায় তারা অধিকাংশ কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেনি। কোনো এজেন্টকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়নি। এমন কী এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার কোনো সংবাদও গণমাধ্যম থেকে জানানো হয়নি।
বিএনপির এই নারী নেত্রী তার বক্তব্যে আরো জানান, ভোটের কয়েক ঘন্টা আগেই আওয়ামী লীগ ব্যালট বাক্সে ভোট দিয়েছিল। বিএনপি বোধ হয় জানেন না যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল। ভোটের আগের দিন কেন্দ্রের আশেপাশে জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা। এই ১৪৪ ধারাকে পাশ কাটিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেয়ে নির্বাচনের আগের দিন জাল ভোট দেয়া যায় না। আর সারারাত সেখানে উপস্থিত থেকে ভোট দেয়া পুরোটাই অসম্ভব ও অবাস্তব।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি কি করেছিল তা কি তারা ভুলে গেছে? ২০০১ সালে সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সাবেক সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতা ও কর্মীদের হত্যা করে। এই সময়েই আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ১৮ বারের বেশি চেষ্টা চালানো হয়।
এছাড়াও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর করেছিল অমানবিক নির্যাতন। সংখ্যালঘুরা বিএনপিকে না দিয়ে ভোট দিয়েছিল আওয়ামী লীগকে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুর্ধর্ষ হামলা চালানো হয় সংখ্যালঘু পাড়ায়। এই হামলায় ধর্ষণ থেকে বাদ যায়নি তৎকালীন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া পূর্ণিমা রানী শিল। বাবা-মায়ের সামনে নির্মমভাবে ধর্ষণ করা হয়েছিল তাকে। শুধু পূর্ণিমা নয় আরো ভয়াবহ কায়দায় ধর্ষণ করা হয়েছিল বাগেরহাটের ছবি রানীকে। তার চিৎকার ও আহাজারিতে সেদিন কেউ তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি। শুধু এই দুজনেই নয়। তাদের মতো আরো শত শত নারী তাদের ধর্ষণের শিকার হয়েছিল।
মানুষ ২০০১ সালের নির্বাচন ও তার পরবর্তী সময়ের কথা ভুলে যায়নি। তবে ভুলে গেছে বিএনপির এসব নেতারা। আজকের এই গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৫০০ জন বিএনপি নেতা-কর্মী। গণশুনানি মানে জনগণের শুনানি, আর তাতে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ আবশ্যক। কিন্তু উক্ত তামাশায় শুধু বিএনপি'র নেতাকর্মী উপস্থিত থাকলে তা কী করে গণশুনানি হয়? যেখানে দেশের ১৮ কোটি মানুষ ও বিশ্ব জানে যে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছিল সেখানে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে ৫০০ জন নেতাকর্মী উপস্থিত রেখে বক্তব্য দিয়ে কিছুই হয় না। দেশ ও দেশের বাইরে এতো মানুষ নির্বাচন নিয়ে অভিমত দিলো সেখানে বিএনপির অতিরঞ্জিত এই কয়েকজন মানুষের কথা অভিমত হিসেবে গণ্য করা যায় না।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.