একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়,রাজনৈতিক অসঙ্গতি,সাংগঠনিক ব্যর্থতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চেষ্টা চালিয়েও সফল হতে পারছে না বিএনপি।দীর্ঘ এক যুগের রাজনৈতিক ব্যর্থতা,নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা,অপারগতা এবং সমন্বয়হীনতার কারণে দলটির নেতৃবৃন্দ হতাশা থেকেই দলত্যাগ করছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।যার কারণে অদূর ভবিষ্যতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তো দূরের কথা বরং দলকে টিকিয়ে রাখতেই নেতাদের হিমশিম খেতে হবে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দু’জন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের সাথে কথা বলে বিএনপি নেতা এম মোরশেদ খানের পদত্যাগ, পরবর্তীতে দলটির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আলাপে এমন মতামত পাওয়া গেছে।
বিএনপি নেতা মোরশেদ খানের পদত্যাগ দলটির জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক তারেক শামসুর রেহমান।তিনি বলেন,এম মোরশেদ খানের পদত্যাগ নিঃসন্দেহে বিএনপির হাইকমান্ডকে ভাবিয়ে তুলেছে।সত্যি বলতে,রাজনৈতিক দুর্দশা,হতাশা ও রাজনৈতিক গ্লানির কারণে মোরশেদ খান হয়তো পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।এক্ষেত্রে বিএনপির দুই ধরণের ক্ষতি হলো।প্রথমত,তার মতো সিনিয়র নেতার পদত্যাগ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে হতাশা ও বিভক্তি ছড়াবে।দ্বিতীয়ত,যতদূর জানি,মোরশেদ খান বিএনপির বড় ডোনার ছিলেন।সেক্ষেত্রে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হলো বিএনপি।
তিনি আরো বলেন,তবে আমার শঙ্কার বিষয় হলো- মোরশেদ খানকে অনুসরণ করে যদি আরো নেতা পদত্যাগ করেন,তবে সরকারবিরোধী আন্দোলন তো দূরের কথা দলটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তারেক রহমানদের লড়াই করতে হবে।ঘর গোছাতে এবং নেতাদের অভিমান দূর করতে করতে বিএনপির আরো এক দশক পার হয়ে যাবে।
এদিকে বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ডা.জাফরুল্লাহ বলেন,এম মোরশেদ খান বিএনপির জন্য বড় ফ্যাক্ট ছিলেন। তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করতে না পারার জন্য তারেক-মির্জা ফখরুলদের ব্যর্থতা দায়ী।তিনি দলকে অকাতরে অর্থ দান করেছেন।কিন্তু বিনিময়ে উপযুক্ত মূল্যায়ন পাননি। তাই অভিমান করেই দল ছাড়লেন।আমি শঙ্কিত এই ভেবে যে,আগামীতে হয়তো দলত্যাগীদের কাতার দীর্ঘ হতে পারে।