দীর্ঘ প্রায় একযুগের পথ চলায় নানা অনৈক্য ও বিভেদের মুখোমুখি হয়ে বিএনপির সাংগঠনিক ঐক্য ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে। নিজেদের বিভক্তি ও অনৈক্যের কারণে রাজনীতির মাঠে নেতিয়ে পড়েছে দলটি। তাই সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে দলকে আন্দোলন উপযোগী করতে কাউন্সিল আয়োজনের পরিকল্পনা করলেও তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে মতবিরোধ।
এক পক্ষের দাবি, সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে দলকে আন্দোলনের উপযোগী করতে অবিলম্বে বিএনপির কাউন্সিল আয়োজন করা জরুরি। অন্য পক্ষ কাউন্সিলের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করলেও দলীয় প্রধানকে কারাগারে রেখে পদ ভাগাভাগি করতে ইচ্ছুক নয়।
বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, তিন বছর পর পর সম্মেলনের মাধ্যমে দলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের বিধান রয়েছে। সে হিসেবে মার্চেই শেষ হয়েছে বর্তমান কমিটির মেয়াদ। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল। এর পাঁচ মাস পর কয়েক দফায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কাউন্সিলের পক্ষের নেতারা বলছেন, কাউন্সিল করলে নেতাদের মধ্যে উদ্যম ফিরে আসবে। ফলে আন্দোলন-কর্মসূচির দিকে এগোনো সহজ হবে। অন্য পক্ষ বলছে, এগুলো কেবল পদ বাণিজ্যের ফন্দি মাত্র। আন্দোলন যেকোনো ভাবেই সংগঠিত করা যায়। দরকার শুধু স্বদিচ্ছা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের নেত্রী জেলে আছেন আর আমরা কাউন্সিল করবো কিভাবে? এ অবস্থায় পদ ভাগাভাগি করা কতটুকু মানানসই হবে তা ভেবে দেখা দরকার। যারা কাউন্সিলের কথা বলছেন, তারা আসলে কার নেতৃত্বে বিশ্বাসী তা ভেবে দেখা দরকার।
এদিকে বিষয়টিকে ভিন্ন চোখে দেখছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, কাউন্সিল আয়োজন করা জরুরি। যে যাই বলুক, আন্দোলন-কর্মসূচিতে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে নতুন কমিটির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি আমরা। আর এতে তারেক রহমানের পূর্ণ-সমর্থন রয়েছে। এ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করার কোনো কারণ দেখছি না।
তবে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলছেন অন্য কথা। তিনি বলেন, যদি দলের কাউন্সিল করা দরকার হয় তবে অবশ্যই খালেদা জিয়ার অনুমতি নেয়া প্রয়োজন। তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়াকে জানানোর পরে যদি তিনি এতে সম্মতি দেন তবে কাউন্সিলে কারোরই আপত্তি থাকবে না বলে আমি মনে করি।
এদিকে কাউন্সিলের কথা বলে নতুন মুখদের পদ দেয়ার মাধ্যমে গোপনে একটি মনোনয়ন বাণিজ্যের পরিকল্পনা চলছে বলেও মনে করছেন অনেকে।