পুরুষ এডিস মশাকে বন্ধ্যা বা খোজাকরণ করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের চিন্তা করছে সরকার। আর এই পদ্ধতি কতটা কার্যকর করা যাবে তা যাচাইয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল ঢাকায় কাজ শুরু করেছে।
দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানসম্মত বিভিন্ন পদ্ধতি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মোট তিনজন বিশেষজ্ঞ জেনেভা থেকে বুধবার (২১ আগস্ট) ঢাকায় নেমেই বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে পুরুষ এডিস মশা বন্ধ্যা বা খোজাকরনণ করার পদ্ধতি কয়েকটি দেশে কার্যকর করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল।
ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে পুরুষ এডিস মশা বন্ধ্যা করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি নিয়ে একটি গবেষণা শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাভারে গিয়ে বাংলাদেশের গবেষকদের সাথে আলোচনা করেছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
সরকারের রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা বলেন, স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক নামে এই পদ্ধতিতে পুরুষ মশাকে রেডিয়ান বা রশ্মি দিয়ে বন্ধ্যা করে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিলে এর সঙ্গে মিলনের পর স্ত্রী এডিস মশা ডিম পাড়লেও তাতে প্রজনন ক্ষমতা থাকে না। ফলে ডেঙ্গুর বাহকের প্রাদুর্ভাব কমে যায়।
বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, পদ্ধতিটি বাংলাদেশে ব্যবহার করা সম্ভব কিনা, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা তা যাচাই করে দেখার পর সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে সরকার।
সরকারি হিসাবে অর্থাৎ স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুসারে ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫৯ হাজার ৫৫২ জনেরও বেশি।
ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে চলতি মাসের ২২ দিনে (২২ আগস্ট পর্যন্ত) রেকর্ডসংখ্যক ৪১ হাজার ১৪১ জন ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন ৪৭ জন।
এদিকে সরকারি হিসাবের সাথে বেসরকারি হিসাবে কিছুটা অমিল রয়েছে। বেসরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, হাসপাতালে ভর্তি ও আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বেশি।