নিউজ ডেস্কঃ-২৯ ডিসেম্বর, ২০১৩। হেমন্তের বিকেল রুক্ষ রূপ ধারণ করতে শুরু করেছে। সেদিন বিকেলে স্বভাবজাত রুক্ষতা দেখিয়েছিলেন খালেদা জিয়াও।
অনেকটা মামুবাড়ির আবদারের মতো করেই অসাংবাধানিক ও অযৌক্তিক কিছু দাবি করেছিলেন তিনি। জামায়াতকে সাথে নিয়ে দেশব্যাপী শুরু করেছিলেন ‘আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার’ পৈশাচিক কর্মকাণ্ড। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসীম সহনশীলতার প্রমাণ দিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও খালেদা তা ফিরিয়ে দেন।
সেদিন বিকেলে হয়তোবা পুড়ে যাওয়া মানুষের গন্ধ নিতেই বের হয়েছিলেন খালেদা। বিএনপি দলগতভাবে এর নাম দিয়েছিলো ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসী’। তবে দলের প্রধান খালেদা একে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘ডেমোক্রেসী ফর মার্চ’।
সেদিন তিনি পাশে পাননি দলের দলের কোন স্তরের নেতাকর্মীকেই। কেবলমাত্র গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগমকে বিরক্ত বদনে তার পাশে দেখা যায়।
গণমাধ্যমকর্মী ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যেদের সাথে খালেদা সেদিনের সেই দুর্ব্যবহারে বিরক্ত হওয়াই স্বাভাবিক। খালেদার এরকম অসভ্য আচরণে বিশ্ববাসী হতবাক হয়ে যান।
সেদিনের পরে পদ্মা, যমুনার জল গড়িয়েছে অনেকদূর। খালেদার বিরুদ্ধে অকাট্য প্রমাণসমৃদ্ধ দুর্নীতির মামলাও গড়িয়েছে রায়ে। সেইসাথে গৃহপরিচারিকা ফাতেমার স্থান হয়েছে কারাগারে, দুর্নীতিবাজ খালেদার সাথে।
একজন প্রমাণিত দুর্নীতিবাজের সাথে আপাতদৃষ্টিতে নিরপরাধ একজন নারী কেন কারাবাস করবেন, সে প্রশ্ন রাজনীতি সচেতন অনেকেরই। খালেদা জিয়া কেন তার দলের শীর্ষ নেতা নেত্রীদের সাথে না নিয়ে ফাতেমা বেগমকেই সাথে নিলেন, তাও একটি বড় প্রশ্ন বটে।
তবে বিএনপির মনোনয়নপ্রক্রিয়া দেখে আরো একটি প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের প্রত্যেকটি আসনেই একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। অসংখ্য আসনে দেয়া হয়েছে জাল মনোনয়নপত্র। কে আসল প্রার্থী আর কে ভুয়া প্রার্থী, কিংবা শেষমেষ কাকে রাখবে বিএনপি অথবা টাকার বিনিময়ে কে তারেক গং এর মন রক্ষা করতে পারবে- সেসব প্রশ্নের উত্তর হাতরে বেড়াচ্ছেন বিএনপি কর্মীরা। তবে ফলাফল ‘শূণ্য’।
কারাগারের বাইরে থাকা অবস্থায়ই অবশ্য নিজের শাসনামলের সন্ত্রাস-অপশাসনের কিছু ফলাফল পেয়েছিলেন খালেদা। দলের ভেতরের কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। এমনকি খোদ স্থায়ী কমিটির ‘মধ্যারাতের বৈঠকগুলোতে’ও নিজ হাতে তিনি সদস্যদের মোবাইল জব্দ করতেন। সাজাপ্রাপ্ত, পলাতক আসামী তারেকও আস্থায় নিতে পারছেন না কাউকেই।
তাই রাজনীতি সচেতন রসিকজনেরা বলছেন, খালেদা-তারেকের একমাত্র আস্থা ফাতেমা বেগমেই। দেশের ৩০০ আসনে ফাতেমাকে মনোনয়ন দেয়া গেলেই হয়তো তারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারতেন।