বান্দরবান অফিসঃ-বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গড়া ২০ দলীয় জোট দীর্ঘ দিন ধরে শুধু কাগজে কলমেই ২০ দলীয় জোট। মাঠ পর্যায়ে তাদের কোনো কর্মসূচি দেখা যায় না। বিভিন্ন দাবি নিয়ে বিএনপি বিভিন্ন সময় বিচ্ছিন্ন আন্দোলন করলেও জোটের সঙ্গীদের পাশে পায়নি বিএনপি। জোট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মতবিরোধ চলে আসছিলো জোটের নেতাদের মধ্যে।
গত ১০ বছরে অসংখ্যবার বৈঠকে বসেও ঐক্যে আসতে পারেনি ২০ দলীয় জোটের নেতারা। ফলশ্রুতিতে খালেদার মুক্তি আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের পাশে পায়নি বিএনপি।
এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হয়ে গত ৭ মাস ধরে কারাবন্দী আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে বিএনপির দলীয় সাংগঠনিক ভিত্তি। খালেদার মুক্তি ছাড়া বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে মরিয়া বিএনপি, সক্রিয় কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছেনা বিএনপি।
সম্প্রতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং খালেদার মুক্তি আন্দোলন ইস্যুকে সামনে রেখে ২০ দলীয় জোটের সাথে ঐক্য গঠনের লক্ষ্যে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে বৈঠকে বসে বিএনপির সিনিয়র নেতারা। ঐক্য গঠনের লক্ষ্যে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও আগামী নির্বাচনে আসন সংখ্যার বণ্টন নিয়ে মতবিরোধের জের ধরে ফলপ্রসূ হয়নি ২০ দলীয় জোটের নেতাদের বৈঠক।
বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার বরাত দিয়ে জানা যায়, বৈঠকের শুরুতেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে তাতে বাধা দেন বৈঠকে উপস্থিত জোটের অন্য নেতারা। তারা এই সময় বলেন, ‘আগে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে হবে’। তারা জানান আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট ৩০০ আসনের বণ্টনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়া দরকার। আসন বণ্টন নিশ্চিত করেই ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।
এ সময় আপত্তি থাকা সত্ত্বেও বিএনপি আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা শুরু করে জোটের নেতাদের সাথে। আলোচনায় জোটের নেতারা বিএনপির কাছে সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১০০ আসন বিএনপির জন্য রেখে ২০০ আসন বিএনপি ছাড়া জোটের বাকি দলগুলোর মধ্যে বণ্টন করে দেয়ার প্রস্তাব করেন। এসময় উপস্থিত অধিকাংশ সিনিয়র নেতা জোটের প্রস্তাবে ঘোর আপত্তি জানান। বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা জানায় বিএনপির নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জোটের দলগুলোকে ৫০ টি আসন দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, তবে খালেদা জিয়া জেল থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই বলেও জানান তারা।
আসন বণ্টনের রাজনীতিতে শেষ পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা এখন দেখার অপেক্ষা।