আশ্রয়ণের ক্ষতিগ্রস্ত ঘর পুনর্নির্মাণ হবে সরকারি খরচে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রায় এক কোটি বিশ হাজার বাড়ির মধ্যে চব্বিশটি স্থানের নির্মাণ কাজের ত্রুটি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে যা বাস্তবায়িত প্রকল্পের ০.২৫ ভাগ। ত্রুটিপূর্ণ যে ০.২৫ ভাগ স্থাপনা চিহ্নিত হয়েছে তা সরকারি খরচে মেরামত এবং প্রয়োজনে পুননির্মাণ করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে তার সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব গৃহ সরকারি খাস জমিতে নির্মিত হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে খাস ভূমিসহ তুলনামূলক নিচু স্থানে হওয়ায় স্থাপনাসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও বিশাল কর্মযজ্ঞের হিসেবের খাতায় ক্ষুদ্র অংশে ত্রুটি দেখা দিলেও যারা এই ত্রুটির জন্য দায়ী এবং দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী সকল গৃহহীন মানুষের জন্য গৃহনির্মাণ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিন্তু সরকারের এ মহৎ কার্যক্রম যখন দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশের বিরাট একটি জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন একটি মতলবি মহল বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপতৎপরতায় মেতে উঠেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ “মুজিববর্ষ” উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় গৃহহীনদের জন্য বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অগ্রসরমান সংগ্রামের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিকভাবে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবন-মানোন্নয়নে সময়োপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, নাগরিকের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই সরকার প্রায় এক কোটি বিশ হাজার গৃহহীন মানুষকে বাড়ি উপহার দিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হঠাৎ গজিয়ে উঠা কোনো ভূঁইফোড় রাজনৈতিক সংগঠন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে। এদেশের মাটির অনেক গভীরে আওয়ামী লীগের শেকড়। শুধু ভৌগোলিক স্বাধীনতাই নয়, অর্থনৈতিক মুক্তিও এসেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্বের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক। এ সম্পর্ক চিরকালের। ইচ্ছে করলেই কেউ তা মুছে ফেলতে পারবে না।
মাটি ও মানুষের হৃদয়ের গভীরে আওয়ামী লীগের স্থান উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিয়ে অতীতে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। উল্টো এই রাজনৈতিক দলটি ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগকে যারা নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিল তারাই নিশ্চিহ্ন হয়েছে। জনগণ তাদেরকেই ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগ আর মানুষের ভালোবাসায় আওয়ামী লীগ আজ মহীরূহে রূপান্তরিত একটি প্রতিষ্ঠান। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগকে যারা জনবিচ্ছিন্ন মনে করে তারা নিজেরাই
এখন জনবিচ্ছিন্ন ও জননিন্দিত। তাদের রাজনীতি আজ অস্তিত্ব সংকটে।
বিএনপির রাজনীতি জনমানুষের জন্য নয় উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, তাদের রাজনীতিতে ত্যাগের কোনো মহিমা নেই, আছে শুধু ভোগের উদগ্র বাসনা। বিএনপি এ দুঃসময়েও মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের আবারও বিএনপি নেতাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক আর ঘোষণার পাঠক এক নয়, এ সত্যটা বিএনপিকে অনুধাবন করতে হবে। ‘আওয়ামী লীগ নাকি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা বিএনপি নেতাদের এক ধরনের ভ্রান্তিবিলাস। এ ভাবনা দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ বিরোধী দলের নেতাদের আত্মতুষ্টি লাভের সস্তা খোরাক মাত্র।
পরিকল্পিতভাবে অপ্রচার চালিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানোর বিরুদ্ধে প্রকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।