সরকারি কর্মচারীদের ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তারে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার ‘লিভ টু আপিল’ করবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
গত সোমবার জাতীয় সংসদে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে আনা একটি বিল উত্থাপনের সময় আপত্তির জবাব দিতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এর আগে বিলটি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী উত্থাপন করলে আপত্তি জানান বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তবে তাঁর আপত্তি সংসদের ভোটে খারিজ হয়ে যায়।
আইনটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করে হারুন বলেন, সম্প্রতি উচ্চ আদালতের একটি রায় হয়েছে। তাই এই আইনটি অকার্যকর। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া সংবিধানের সঙ্গে যায় না। যারা অপরাধ করবে তাদের কী আইনের আওতায় আনা হবে না-এমন প্রশ্ন রেখে হারুন বলেন, আগে এই আইনে যেসব অসংগতি আছে সেগুলো দূর করতে হবে।
জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, আইনে কারও ব্যক্তিগত অপরাধের দায়মুক্তি নেই। সরকারি কর্মচারিরা যাতে অহেতুক হয়রানির শিকার না হন সে জন্য ভারতসহ বিভিন্ন দেশের আইনে এই বিধানটি আছে। সিআরপিসির ১৯৭ ধারাতেও এটি আছে। এ বিষয়ে আমরা লিভ টু আপিল করব।
গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট একটি রায়ে ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধান ‘বেআইনি’ ঘোষণা করে।
রায়ে আদালত বলেছে, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ওই ধারা ‘সংবিধান পরিপন্থী এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী’।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারের এক গেজেটে ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হয়।
আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।