দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে পাঠদান কার্যক্রমকে আরো বিস্তৃত করতে অচিরেই বিটিভি’র শিক্ষা চ্যানেল চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘পিআইবি-এটুআই গণমাধ্যম পুরস্কার-২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা জানান। পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, তথ্য সম্প্রচার সচিব মো: মকবুল হোসেন এবং এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক ড. মো: আব্দুল মান্নান, পিএএ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির দীর্ঘ সময়ে অনলাইনে এবং টিভি স্লটের মাধ্যমে পাঠদান চলমান থাকলেও স্বাভাবিকভাবে ক্লাস করতে না পারার কারণে শিক্ষার্থীদের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমরা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের পক্ষ থেকে যতদ্রুত সম্ভব বিটিভি’র একটি শিক্ষা চ্যানেল চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
আজকের পৃথিবী তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর এবং কোন জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে কতটুকু শিক্ষিত সেটার ওপর সেই জাতির প্রবৃদ্ধি, অগ্রগতি ও উন্নয়ন নির্ভর করছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, আমাদের দেশ এই করোনার মধ্যেও এগিয়ে চলার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা করোনার মধ্যেও তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছি।
দেশে লকডাউন, ছুটি, শাটডাউন সবকিছুর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী পুরো সরকার যন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে সচল রেখেছেন বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন ভার্চুয়ালি মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন। তিনি যখন স্বশরীরে উপস্থিত থাকতেন এবং বর্তমানে যখন ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকেন, আমি নিজে কখনো এ দু’য়ের মধ্যে বিন্দুমাত্র পার্থক্য পাইনি। দেশটা আজকে ডিজিটাল হয়েছে বিধায় এটি সম্ভবপর হয়েছে। এজন্য মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্যপুত্র, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি ড. হাছান। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও ডিজিটাল লিটারেসি’র বিকল্প নেই উল্লেখ করেন তিনি।
জনসংযোগ কর্মকর্তাদের হতে হবে নিউ-মিডিয়াবান্ধব:
এছাড়া গতকাল সার্কিট হাউস রোডে তথ্য ভবন মিলনায়নে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে প্রচার কার্যক্রমে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাদের ভূমিকা বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. হাছান বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর জনসংযোগ কর্মকর্তাদের নিউ-মিডিয়াবান্ধব হতে হবে। বর্তমান নিউ মিডিয়ার প্রেক্ষাপটে জনসংযোগের কাজ কেমন হবে সেটি সবার জানা থাকা প্রয়োজন এবং সে অনুযায়ী কাজ করার সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আগে জনসংযোগ কর্মকর্তারা সংবাদ পরিবেশনের জন্য একটি প্রেস রিলিজ দিয়ে দিতেন এবং সেটিই যথেষ্ট ছিল এখন কিন্তু তা নয়, পুরো সংবাদমাধ্যমের ক্যানভাসটা অনেক বড় হয়ে গেছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, জনসংযোগ কর্মকর্তারা যদি সংবাদের শর্টফিড বা অডিও-ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নেট বা মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়, সেটা অনেক কার্যকর হয়। কারণ পত্রিকার পাশাপাশি টেলিভিশন দেখে কমপক্ষে তিন কোটি মানুষ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে পৌনে সাত কোটি। সংবাদটা যদি টেলিভিশন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না যায় তাহলে অনেক মানুষ সেই সংবাদ পাচ্ছে না। এই বিষয়গুলো সব জনসংযোগ কর্মকর্তার একেবারে আঙ্গুলের ডগায় থাকতে হবে, এর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোও তাকে দিতে হবে। আমি নিজে গভীর রাত পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ রাখি, ক্ষেত্রবিশেষে আমার জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলি।