মেঘের রাজ্য নিলাচলে প্রাণ জুড়াচ্ছে বিপুলসংখ্যক পর্যটক


আকাশ মারমা মংসিং প্রকাশের সময় :৫ মে, ২০২২ ৫:২৩ : অপরাহ্ণ 429 Views

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলভূমি ‘পাহাড়ী কণ্যা’ বান্দরবান। প্রকৃতির ভরপুর এ জেলায় পর্যটকদের জন্য নয়ন ও প্রাণজুড়ানো জানা অজানা অনেকগুলি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তবে কয়েকটি পর্যটন স্পটের মধ্যে মেঘের রাজ্য নীলাচল খ্যাত বলা যায়।

এখানে বর্ষা মৌসুমে অর্থাৎ বৃষ্টির দিনে পুরো এলাকা জুড়ে নীলাচলের সৌন্দর্য একেবারে ভিন্ন রূপ ধারণ করে। হালকা বৃষ্টির পর দূর আকাশের মেঘের সারি ভেসে আসে নীলাচলের চূড়ায়। পাহাড় চূড়া থেকে দেখলে মনে হবে, এই যেন মেঘের সাথে পাহাড়ের লুকোচুরি খেলা। এসময় পাহাড়গুলো যেন ফিরে পায় নতুন প্রাণ, চারিদিক সবুজের আবরণে ঢাকা পড়ছে। চারিদিকে সবুজে মোড়ানো প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের দৃশ্য আর বিশেষ করে মেঘকে কাছ থেকে ছুঁয়ে দেখতে ভ্রমণ পিপাসুরা নীলাচলে ভীড় করে থাকেন।

নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে দায়িত্বরত ম্যানেজার (টিকেট সংগ্রহকারী) আদিত্য বড়ুয়া জানান, এই ঈদে নীলাচলে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়েছে। ১মদিন দুই হাজার খানিক টিকেট বিক্রি হলো। ২য়দিনেও (৫টা পর্যন্ত তথ্য) প্রায় আড়াই হাজারের অধিক টিকেট বিক্রি হয়েছে।

ঈদের ২য় দিন বুধবার নীলাচল পর্যটন স্পটে ঘুরে দেখা দেখা গেছে, পড়ন্ত বিকেলে কানায় কানায় দর্শকমুখর হয়ে উঠেছে পর্যটন স্পট নীলাচল। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে দেখা গেছে প্রাকৃতিক কোলাহল মুক্ত বাতাসে গোলটেবিলে বসে আড্ডা কেউবা সাজানো রেলিং-এ বসে গল্পগুজব করছে। আবার অনেকে এদিক-সেদিক ঘুরে মুঠোফোনে ছবি তুলে স্মৃতি করে রাখছে। মাঝে মাঝে হালকা ঝড়ো বৃষ্টি আর চারিদিকে ঘন মেঘ সবকিছু মিলিয়ে পর্যটন স্পট নীলাচলে সৌর্ন্দয উপভোগ করতে জায়গাটিতে ভীড় করছেন প্রকৃতি প্রেমিরা।

নীলাচলে বেড়াতে আসা আরেক দর্শনার্থী গাজীপুর কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত রোশন আরা বলেন, অনেকদিন পর ঈদের টানা ছুটিতে ১২জন সদস্য মিলে বান্দরবানে বেড়াতে এসেছি। তার ভাষ্য মতে, চারিদিকে পাহাড় আর সৌন্দর্য্যে ভরপুর বান্দরবান। তবে নীলাচলে দর্শনার্থী বাড়ানোর তাগিদে আরো নতুন নতুন বিনোদনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

অন্যদিকে মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের পর্যটকদের ভীর ও কমতি নয়। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে মেঘলা পর্যটন গুলোতে ছিলো সমাগমের। মেঘলা ঝুলন্ত ব্রিজের স্মৃতি হিসেবে রাখতে কেউ সেল্ফি, আবার ওয়াটার হ্যান্ড বোটের চড়ে বেড়াচ্ছেন লেকে। শুধু কি তাই স্ব- পরিবার মিলে ক্যাবল কারে এপার থেকে ওপার চড়ে মেঘলা সৌন্দর্য মুহুর্ত কাটাচ্ছেন পর্যটকরা।

ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকা থেকে সপরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, এই সময়ে বৃষ্টি হচ্ছে আমি মনে করি সেটা সৃষ্টিকর্তার অমূল্য দান। পাহাড়ের একেক জায়গার একেক রকম সৌন্দর্য। অনেকদিন পর যান্ত্রিক শহর ছেড়ে বান্দরবানের মেঘলায় কেন্দ্রে মনোমুগ্ধকর পরিবেশে প্রকৃতির নির্মল বাতাস আর দূরে তাকালে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে এখানকার জনগোষ্ঠীদের জীবনবৈচিত্র সবচেয়ে আমার মন কেড়ে নিয়েছে।

মেঘলা টিকেট কাউন্টার ম্যানেজার সুকুমার তংচঙ্গ্যা জানান,ঈদের দু দিনের প্রায় আড়াই হাজার মতন টিকিট বিক্রি হয়েছে। আশা করি এ-ই কয়দিনে আরো পর্যটকের সমাগম হবে।

জেলা প্রশাসন এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.কায়েসুর রহমান বলেন,জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি মহোদয় এর নির্দেশে জেলা প্রশাসন এর অন্তর্ভুক্ত সকল স্পটগুলোকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে।এতে পর্যটকরা নানা ধরনের নতুন সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।একইসাথে প্রতিটি পর্যটন জেলা প্রশাসন এর নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি প্রতিটি পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা বাহিনী নিয়োজিত আছে এবং পর্যটকদের জন্য কঠোর নিরাপত্তা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
March 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!