নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি ও দৌছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় ফের গোলাগুলির শব্দঃ জনমনে আতঙ্ক


নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে মো.আবদুর রশিদ প্রকাশের সময় :২২ অক্টোবর, ২০২২ ৮:৩৭ : অপরাহ্ণ 277 Views

বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ও দৌছড়ি ইউনিয়নে সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ও আজ নতুন করে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন ও দৌছড়ি ইউনিয়নের সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে একের পর এক মর্টার ও আর্টিলারি বোমা বিস্ফোরণ ও প্রচন্ড গুলাগুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দারা।

শনিবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১টা থেকে এই প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৪,৬,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের চেরারমাঠ সীমান্তের ৪৪,৪৫,৪৬ ও দৌছড়ি ইউনিয়নের ৪৭,৪৮ ও ৫৯ পিলার পুরান মাইজ্জা ক্যাম্প,অংচাফ্রী ক্যাম্প,ও সালি ডং ক্যাম্পের তাদের চৌকি থেকে অগণিত মর্টার ও আর্টিলারি বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজে যেন এপারে ভূমিকম্প হচ্ছে এমনটি জানিয়েছেন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আবছার ইমন।তিনি আরো বলেন, দুপুর ১ টা থেকে ওপার থেকে গুলাগুলি ও আর্টিলারি মটারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজে এপারের বেশ কয়েকটা গ্রাম কেঁপে ওঠেছে।

এলাকাবাসী ছুটাছুটি করছেন এবং সীমান্তে অবস্থানরত সবাই আতঙ্কিত। কারণ আজ পর্যন্ত এধরণের গুলাগুলির আওয়াজ কখনো শুনেনি।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইমরান।তিনি জানান,শনিবার সকাল সাড়ে ১২টায় হঠাৎ দৌছড়ির বাহিরমাঠ এর ৭,৮ নং ওয়ার্ডের নিকটবর্তী ৪৯,৫০ সীমান্ত পিলারের ঠিক কাছাকাছি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজেপি) এর সাথে সেই দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে প্রচন্ড গোলাগুলি ও মর্টারশেলের বিকট শব্দ এপারের সীমান্তে শুনা গেলে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতংকে বিরাজ করছে।

তবে সংঘটিত গোলাগুলিতে এপারের ভূখন্ডে দুইটি ভারী অস্ত্রের গুলি আমাদের ভূখন্ডে পড়েছে বলে জানিয়েছেন একিই এলাকার বাসিন্দা আব্দু শুক্কুর তিনি আরও জানান,সকালে ধান ক্ষেতে কাজ করার সময় হঠাৎ মিয়ানমারে ভূখন্ডে প্রচন্ড গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পায়।তখন গোলাগুলির আওয়াজ শুনে ধান ক্ষেত থেকে সরে আসার পর পরই দুইটি ভারী অস্ত্রের গুলি লেমুছড়ি বিজিবি ক্যাম্পের প্রায় তিনশত গজ দূরত্বে এসে পড়েছে বলে তিনি জানান।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে,দুই মাসের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে রাখাইন রাজ্যের ওয়ালিডং এবং খ্য মং সেক পাহাড়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির তুমুল লড়াই শুরু হয়।দেড় মাস পর এ যুদ্ধের ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিকের জেলা শহর মংডু এবং তার আশপাশের এলাকায়।বর্তমানে দক্ষিণ মংডুর বুচিডং, রাচিডং এলাকায় উভয় পক্ষের তুমুল লড়াই চলছে।১২ থেকে ১৪ দিন আগে দৌছড়ি ইউনিয়নে দক্ষিণ বাহির মাঠ সীমান্তের বিপরীতে রাখাইন রাজ্যের পাহাড়ে স্থাপিত বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) একাধিক চৌকি দখলে নেয় আরাকান আর্মি।এখন চৌকিগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। গুলিবর্ষণের পাশাপাশি মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে।

এদিকে জামছড়ি জামে মসজিদে যোহর নামাজ পড়তে আসা মুসল্লি,মোয়াজ্জেম ও ইমাম জানিয়েছেন,ওপারে বিস্ফোরণের আওয়াজে যোহরের নামাজের সময় অনেকটা ভয়ে কাজ করেছিল কারণ কখন জানি মটার্শেল আমাদের মসজিদে এসে পড়ে।

এবিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা ফেরদৌস জানান,সদর ইউনিয়ন ও দৌছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মর্টারশেলের আওয়াজের কথা শুনেছেন তিনি।সীমান্তে বসবাসরত সকলকে নিরাপদে চলাফেরা করার জন্য চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

১১ বিজিবির একটি সূত্র জানান,তাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে।তাদের সদস্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।টহল জেরদার করা হয়।যেন কোন নতুন রোহিঙ্গা এদেশে প্রবেশ করতে না পারে
বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!