লালখানবাজারে বৈঠকে নগর ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যার পরিকল্পনা


প্রকাশের সময় :২১ অক্টোবর, ২০১৭ ১১:৪২ : অপরাহ্ণ 536 Views

সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-নগর ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যার পরিকল্পনা হয় নগরীর লালখানবাজারের একটি বাসায়।ঘটনার আগের রাতে হত্যার পরিকল্পনার পুরো ছক করা হয়।মাটিতে ফেলে চার-পাঁচজন সন্ত্রাসী মিলে কাঠের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে ১০ থেকে ১২ সেকেন্ড বেধড়ক পিঠুনি দিলে সে আঘাতের প্রচ-তায় মারা যান সুদীপ্ত।সুদীপ্ত হত্যার ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন মোক্তার।নগরী ছেড়ে পালিয়ে যাবার সময় ঘটনার আটদিনের মাথায় গত শুক্রবার রাতে ধরা পড়া মোক্তার হোসেন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানান।মোক্তার লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,সিটি কলেজের সাবেক এক নেতাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে নিজের ওয়ালে বেশ কয়েকটি মন্তব্য করেন সুদীপ্ত।এতে উক্ত নেতা বেজায় ক্ষেপে যান। পরবর্তীতে লালখানবাজারে বসেই সুদীপ্ত হত্যার পরিকল্পনার ছক আঁকেন।ঘটনার আগের দিন (৫ অক্টোবর) রাত আনুমানিক নয়টা থেকে সাড়ে নয়টার দিকে লালখানবাজারের একটি বাসায় সুদীপ্তকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।লালখানবাজারের উক্ত নেতাসহ ৫ থেকে ৬ জনের এ রুদ্ধধার বৈঠকে মোক্তারকেও ডাকা হয়েছিলো।তাদেরকে সুদীপ্ত হত্যার পুরো পরিকল্পনা বুঝিয়ে দেয়া হয় রাতের ঐ বৈঠকে।পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন (৬ অক্টোবর) সুদীপ্তকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে সিটি কলেজ এলাকায় নালাপাড়ার বাসার গেটের সামনে কাঠের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। মাথার পেছনে আঘাত পাওয়ায় ঘটনার প্রায় পাঁচ ঘণ্টার মাথায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সুদীপ্ত।ঘটনার পরদিন কক্সবাজার চলে যাওয়া মোক্তার গত মঙ্গলবার ফিরে আসেন নগরীর বাসায়।শুক্রবার নগরীর বড়পুল এলাকার শাহী বাস কাউন্টার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মোক্তার পুলিশকে জানিয়েছেন-গ্রেপ্তার এড়াতে কক্সবাজার থেকে ফিরে আসার পর ভোলায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।নগর পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার মোস্তাইন হোসাইন জানান, ‘একজন কিংবা একের অধিক ব্যক্তির পরিকল্পনায় এ হত্যাকা- সংগঠিত হয়েছে।ব্যক্তিগত কোন কারণে নয়-কারো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সুদীপ্ত হত্যায় অংশ নিয়েছে মোক্তার। ঘটনায় জড়িত ছিল এমন বেশকিছু ব্যক্তির নামও সে আমাদের কাছে জানিয়েছে। এসব ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।’ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন জানান, ‘দশদিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে মোক্তারকে শনিবার (গতকাল) আদালতে হাজির করা হলে আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।আশা করছি সুদীপ্ত হত্যার বিষয়ে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবো।’ গতকাল শনিবার বিকেলে লালখানবাজার এলাকায় গেলে সেখানকার ব্যবসায়ী কিংবা স্থানীয় লোকজন মোক্তারের বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজী হননি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী জানান,স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতার খুবই কাছের মানুষ মোক্তার।পুরো লালখান বাজার ওয়ার্ডের লোকজন উক্ত নেতার ভয়ে তটস্থ থাকেন।স্থানীয় জনিপ্রতিনিধিদের সাথেও সুসম্পর্ক রয়েছে মোক্তারের।মোক্তারের নিজ বাড়ি কুমিল্লার তিতাস থানার মহিমপুর গ্রামে। নগরীর টাইগারপাস কুয়ারমাঠ এলাকার রেলওয়ে কোয়ার্টারের সাত নম্বর ভবনের তৃতীয় তলায় থাকেন তিনি।জনৈক জাফরের কাছ থেকে মাসিক নয় হাজার টাকায় এ বাসা ভাড়া নিয়েছেন।টাইগারপাসে আসার আগে আগ্রাবাদ চৌমুহনী নজিরভা-ারী লেনের স্বপন জমিদারের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় মোক্তার,অন্য ভাইয়েরা আলাদা থাকেন। বাবা মোসলেম গ্রামের বাড়িতে থাকেন।লালখানবাজার এলাকায় থাকলেও বায়েজিদে তার মালিকানাধীন একটি রিকশার গ্যারেজ আছে।সেখানে ১৮/২০টি রিকশা রয়েছে তার।তার স্ত্রী দেওয়ানহাট মন্দিরের পাশে একটি গার্মেন্টসে অপারেটর পদে চাকুরি করছেন দুইমাস ধরে।২০১২ সালের শেষদিকে দুবাই গিয়ে ২৭ মাস পর ২০১৫ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন।(((দৈনিক পূর্বকোন)))

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!