শান্তিচুক্তির মাধ্যমে এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে : রিজিয়ন কমান্ডার খন্দকার শাহিদুল ইমরান


সিএইচটি টাইমস অনলাইন প্রকাশের সময় :২ ডিসেম্বর, ২০১৯ ৬:১৮ : অপরাহ্ণ 586 Views

“ঐক্যের মাঝে শান্তি পাই,পাহাড়ী বাঙ্গালী ভাই ভাই” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বান্দরবান জেলা পরিষদের উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২২তম বর্ষপূর্তি পালন করা হয়েছে।দিবসটি উপলক্ষে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন,বান্দরবান জেলা পরিষদ ও বান্দরবান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাজার মাঠে এসে সমবেত হয়।এসময় শোভাযাত্রায় ১১ টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সম্প্রদায় ও বাঙ্গালীরা মিলে বর্নিল পোষাক ও ব্যানার এবং ফেষ্টুন হাতে নিয়ে এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।পরে রাজার মাঠে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে শান্তিচুক্তির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল খন্দকার শাহিদুল ইমরান,এফডব্লিউসি,পিএসসি।বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চিং ইয়ং ম্রো এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম ইসলাম,পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার,জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল আখতার উস সামাদ রাফি,বিএসপি,পিএসসি, বান্দরবান জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম কাউছার,পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মোঃ শফিকুর রহমান,পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী,সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ.কে.এম জাহাঙ্গীর,সিভিল সার্জন অং সুই প্রু,রিজিয়ন এর জি-টু মেজর ইফতেখার হোসেন পিএসসি,পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাস,মোজাম্মেল হক বাহাদুর,ফিলিপ ত্রিপুরা প্রমুখ।এছাড়াও বান্দরবান সেনা রিজিয়ন এবং সেনা জোনের অন্যান্য অফিসার্স,সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী,সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বান্দরবান আওয়ামীলীগ এর বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার বলেন,পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের কাছে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম,এ চুক্তির মাধ্যমে এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার অত্যান্ত আন্তরিক।চুক্তির ধারা অনুসারে দুই তৃতীয়ংশ সেনা ক্যাম্প পার্বত্যঞ্চল থেকে সরানো হয়েছে।কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা ঘুরছে,চাঁদাবাজি করছে,উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।শান্তি প্রতিষ্ঠা ও চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নে এখনো প্রতিবন্ধকতা সেই অস্ত্রধারীরা।সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য সাধারণ মানুষকে সজাগ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর প্রধান আরো বলেন-সরকার শান্তি চুক্তি করার সময় পাহাড়ে একটিমাত্র আঞ্চলিক দল ছিল।কিন্তু চুক্তি করার পরে পার্বত্যঞ্চলে চারটির অধিক দল গঠিত হয়েছে এবং প্রত্যেকের সস্বস্ত্র ক্যাডার বাহিনী রয়েছে।নিজেদের অবস্থান জানান দিতে এবং চাঁদা আদায়ের সুবিধার্থে তারা বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে।তাদের কারণেই পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের সৃষ্টি হচ্ছে।সেনা রিজিয়নের এই কর্মকর্তা আরো বলেন-পার্বত্যমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিক ও উদার পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য।তিনি সকল জাতিগোষ্ঠীর কাছে শান্তির সুবাতাস পৌছে দেয়ার জন্য কাজ করছে।শান্তি চুক্তির শর্ত অনুসারে পাহাড়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করে অস্ত্র জমা দেওয়ার জন্য পুন: আহ্বান জানান সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা।

আলোচনা সভা শেষে সেনাবাহিনী ও সিভিল সার্জন দপ্তরের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষুধ বিতরণ করা হয়।চিকিৎসা শিবিরে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা প্রদান ও বিনামূল্যে ঔষুধ বিতরণ করেন।এসময় মেডিসিন, ডেন্টাল,পরিবার পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।অনুষ্টানে গরীব ও অসহায়দের মাঝে ১ হাজার পিচ কম্বল ও ছাত্র ছাত্রীদের বই-খাতা,স্কুল ব্যাগসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!