রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ২০০ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ অক্টোবর, ২০২০ ২:৫৮ : অপরাহ্ণ 438 Views

রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য দাতা সম্মেলনে আরও ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এ খাতে সবচেয়ে বড় দাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এই অর্থ বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা এবং সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের অন্যান্য সম্প্রদায়ের জন্য ব্যবহার হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। বৃহস্পতিবার সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

পরে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বড় ও উদার দাতা দেশ এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের অবদানকে স্বীকার করে।

কভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় ৪৬ মিলিয়ন ডলারসহ ২০২০ অর্থবছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আমাদের মানবিক সহায়তার পরিমাণ ৪৩৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
এর মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য ৩৪৯ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ, যার মধ্যে কভিড-১৯ মোকাবিলায় ৩৪ মিলিয়ন ডলার অন্তর্ভুক্ত। আর মিয়ানমারের অভ্যন্তরেও বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য ৮৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ, যার মধ্যে কভিড-১৯ মোকাবিলায় ১১ মিলিয়ন ডলার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই নতুন তহবিলসহ ২০১৭ সালের আগস্টে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে আমরা বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও এই অঞ্চলে প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার দিয়েছি। এই সহায়তার মাধ্যমে আমাদের অংশীদার মানবিক সংস্থাগুলো বর্তমানে জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ের সব ক্ষেত্রে কাজ করছে : খাদ্য; পুষ্টি; আশ্রয়; কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ; কৃষি; দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাস; শিক্ষা; জরুরি টেলিযোগাযোগ; স্বাস্থ্য; উপকরণ-সরবরাহ; সুরক্ষা (জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলা ও শিশু সুরক্ষাসহ); জীবিকা পুনরুদ্ধার ও নতুন জীবিকার ব্যবস্থা করা; বহুমুখী কাজের জন্য নগদ অর্থ প্রদান; এলাকার ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন; এবং পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি পালন। যেসব কর্মসূচির সফলতার ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত সেসব কর্মসূচিতে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে, যেমন- ইউএনএইচসিআর, আইওএম, ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, জাতিসংঘের মানবিক সহায়তামূলক কার্যক্রমের সমন্বয়কারী সংস্থা ওসিএইচএ, ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেট মুভমেন্ট এবং অসংখ্য বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) জীবন রক্ষাকারী কার্যক্রম এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সফলতার যাদের প্রমাণিত দক্ষতা রয়েছে। পম্পেও বলেন, আমরা যুক্তরাজ্য, ইইউ এবং ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে মিলে যেসব দাতা সহায়তা ঘোষণা করেছেন তাদের সাধুবাদ জানাই।

অন্যদেরও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় তহবিল নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারদের পাশাপাশি নতুন ও আগ্রহী সব দাতার প্রতি আমার এই আহ্বান। জাতিসংঘ এ বছর বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মানবিক চাহিদা মেটাতে ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সাহায্যের আবেদন করেছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার অংশীদারদের সঙ্গে রাখাইন অঞ্চলে অব্যাহত সহিংসতা নিরসনে কাজ করছে এবং দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতায় ইন্ধন দেওয়া মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্যদের সহিংসতা নিরসনে এবং সহিংসতার শিকার মানুষদের সহায়তা করার বিশেষ দায়বদ্ধতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের সহায়তায় অন্যান্য আঞ্চলিক অংশীদারদের উল্লেখযোগ্য অবদানকে স্বীকার করে এবং তা অব্যাহত রাখতে আহবান জানায়। আন্তর্জাতিক মানবিক নীতিমালার ভিত্তিতে আমরা একসঙ্গে এই মানবিক সংকট সমাধানে বহুমুখী প্রচেষ্টা চালাব। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী মানবিক কূটনীতিতে আমাদের নেতৃত্বের অংশ হিসেবে, আমরা মিয়ানমারের সব ব্যক্তিকে বাধামুক্ত নিরবচ্ছিন্ন ও টেকসই মানবিক সহায়তা দিতে বার্মার সরকারের প্রতি (সবসময়) আহ্বান জানিয়ে আসছি। এ ছাড়াও আমরা রোহিঙ্গা ও অন্যান্য বাস্তুচ্যুত মানুষ যাতে তাদের জন্মস্থানে বা পছন্দের জায়গায় স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে এবং টেকসইভাবে ফিরে আসতে পারে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরিবেশ ও ব্যবস্থা তৈরির মাধ্যমে এ সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য কাজ করা অব্যাহত রেখেছি। আরও বিস্তৃতভাবে বললে, আমরা শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মরত অন্যান্য জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীসহ বার্মার জনগণের সঙ্গে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রেখেছি।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!