অর্থপাচার মামলায় তারেকের বন্ধু মামুনের ৭ বছরের কারাদণ্ড


সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ১০:০৭ : অপরাহ্ণ 687 Views

লন্ডনে অর্থপাচারের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে পাচার করা ১২ কোটি টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আসামি গিয়াসউদ্দিন আল মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।এর আগে, গত ৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজ বুধবার দিন নির্ধারণ করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। অন্যদিকে আসামি পক্ষে আসাদুজ্জামান, জাহেদুল ইসলাম কোয়েল ও হেলাল উদ্দিন যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন।মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিটিএল ও গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালের চেয়ারম্যান এম শাহজাদ আলীর রেলওয়ের সিগন্যালিং আধুনিকীকরণের টেন্ডার পান। কিন্তু কার্যাদেশ চূড়ান্ত করার সময় মামুন তার কাছে অবৈধ কমিশন দাবি করেন। তা না পেলে কার্যাদেশ বাতিল করার হুমকি দেন। ওই হুমকি দিয়ে মামুন ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা নেন। পরে তা বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে পাচার করেন।ওই অভিযোগে ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলাটি করে দুদক। ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল মামুনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলাটির চার্জশিটভুক্ত ১০ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। আসামির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অর্থপাচার, কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে আরেকটি অর্থপাচার মামলায় ২০১৩ সালে এ আসামির ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন একই আদালত। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি মামুনকে ৪০ কোটি টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়।উল্লেখ্য, মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে ঘুষ ও মানি লন্ডারিং নিয়ে তদন্ত করেছে এবং বাংলাদেশের আদালতে তাদের বিরুদ্ধে এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন এফবিআইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি। এফবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে যে, তারেক ও মামুন তাদের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর পরিচালক এবং চীনের হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন এর এদেশীয় এজেন্ট খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছিল।এফবিআইয়ের এজেন্ট ডেব্রা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ এই বিষয়ে তারেক ও মামুনের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের আদালতের সামনে সাক্ষ্য দেন যে, ব্যবসায়ী খাদিজা ইসলাম তারেকের বন্ধু মামুনের সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বারে ওই টাকা জমা দিয়েছিলেন। ওই একই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারেক রহমানের নামে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড ইস্যু করা হয়। তারেক রহমান এই কার্ড বিভিন্ন দেশে যেমন; গ্রিস, জার্মানী, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রমোদ ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করেছিল এমন তথ্যই উঠে এসেছে এফবিআইয়ের তদন্তে।
২১ জুলাই ২০১৬ সালে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত তারেক রহমানকে সাত বছরের জেল এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে মানি লন্ডারিং এর জন্য। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ ‘ফিনানশিয়াল ক্রাইম’ ছিল এবং এ ধরণের কাজ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বড় রকমের একটি বাধা। অবশেষে তারেক রহমানের উক্ত অপরাধ সহ আরো নানান অনৈতিক কাজের সঙ্গী মামুনকেও মুখোমুখি করা হলো বিচারের।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!