শিরোনাম: খেলাধূলার পাশাপাশি পড়াশোনার প্রতিও শিক্ষার্থীদের মনযোগী হতে হবেঃ ডিসি শামীম আরা রিনি বান্দরবানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এর সভাপতি নির্বাচিত হলেন মামুনুর রশীদ বান্দরবানে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন অনুষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করুনঃ ডিসি শামীম আরা রিনি বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের দুই সন্ত্রাসী আটক বান্দরবানে তারুণ্যের উৎসবঃ উদ্বোধনের অপেক্ষায় জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ রোয়াংছড়ি আর্মি ক্যাম্পের উদ্যোগে মাতৃদুগ্ধ পোষ্যকালীন মায়েদের সহায়তায় বিশেষ অনুষ্ঠান ও উপহার বিতরণ

অখ্যাত মাতারবাড়ীতে এখন নতুন স্বপ্নের ঝলক


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ৭:৪৯ : অপরাহ্ণ 325 Views

এক সময়ের অনুন্নত, অখ্যাত মাতারবাড়ীতে এখন নতুন স্বপ্নের ঝলক। এই স্বপ্ন অর্থনৈতিক উন্নয়নের। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম মাতারবাড়ী। আয়তনে ৬ হাজার ৫৩২ একর বা ২৬ দশমিক ৪৩ বর্গকিমি। মহেশখালীর উত্তর পশ্চিমাংশে এর অবস্থান। উপজেলার মূল ভূখ- থেকে এটি আলাদা। দক্ষিণে ধলঘাটা ইউনিয়ন। পূর্বে কোহেলিয়া নদী। পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর ও কুতুবদিয়া চ্যানেল।

বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে লাগোয়া এই মাতারবাড়ীকে ঘিরে শুরু হয়েছে দেশী-বিদেশী অর্থায়নে উন্নয়নের এক মহাযজ্ঞ। এককভাবে জাইকাই বিনিয়োগ করছে ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ। এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। এই পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৬৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নের চিন্তা ভাবনা রয়েছে। জাপানের অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকাই মূলত মাতারবাড়ীকে অর্থনৈতিক অন্যতম একটি শক্তিশালী কেন্দ্রে পরিণত করার নেপথ্যে মূল ঋণদাতা। গভীর সমুদ্র বন্দর ছাড়াও বিদ্যুত কেন্দ্র, অর্থনৈতিক অঞ্চল, পর্যটনসহ টাউনশিপ, এলএনজি ও এলপিজি টার্মিনাল ইত্যাদি নিয়ে। ফলশ্রুতিতে গত বছর নবেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করার নির্দেশ প্রদান করেন। তবে এর আগে বিপুল অঙ্কের অর্থের বিনিয়োগ, এর নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক কার্যক্রমের জন্য ২০১৮ সালে মিডি (মহেশখালী-মাতারবাড়ী ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ) নামে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। ধারণা পাওয়া গেছে, এই কমিটিকেই মাতারবাড়ী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে রূপান্তর করার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। মাতারবাড়ীকে ঘিরে আগামীতে অর্থনীতির চাকা নতুনভাবে ঘুরবে। কর্মসংস্থান, উৎপাদন, আমদানি-রফতানি পণ্য নিয়ে কর্মবহুল পরিবেশ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে নিঃসন্দেহে।

সরকারী একটি দায়িত্বশীল সূত্রে শনিবার জানিয়েছে, মীরসরাইতে যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর প্রতিষ্ঠা হচ্ছে সেখান থেকে পতেঙ্গার আউটার রিংরোড হয়ে বঙ্গবন্ধু চ্যানেলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে কক্সবাজার পর্যন্ত। যার সঙ্গে মাতারবাড়ীও সংযুক্ত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এই মাতারবাড়ীকে ঘিরে সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা মনিটরিং করা হচ্ছে। উন্নয়নের এই মহাযজ্ঞ সম্পন্ন করতে শেষ পর্যন্ত তা টাকার অঙ্কে ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। প্রাথমিকভাবে ৩ লাখ কোটি টাকার ব্যয়ের প্রাথমিক চিন্তা ভাবনা রয়েছে।

মাতারবাড়ী নামটি এখন দেশের সর্বক্ষেত্রে একটি স্বপ্নের নাম। এই স্বপ্ন আগামীর। চট্টগ্রাম বন্দরকে অর্থনীতির মেরুদ- বলা হয়ে থাকে। সে প্রক্রিয়ায় মাতারবাড়ী হবে জাতীয় অর্থনীতির আরেকটি মেরুদ-। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। আরও প্রায় এক লাখ কোটি টাকার মতো প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। ছোট বড় মিলিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের ঝলকে মাতারবাড়ী এখন অর্থনীতির নতুন স্বপ্নপুরী। মাতারবাড়ীতে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ দেশের ভবিষ্যত অর্থনীতিকে পাল্টে দেবে বলে অর্থনীতিকদের ধারণা। ইন্ডাস্ট্রিয়াল থেকে শুরু করে এনার্জি হাব, গ্যাস ট্রান্সমিশন আবার সমুদ্র তলদেশ দিয়ে আমদানির জ্বালানি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় পৌঁছানোর জন্য সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প প্রায় শেষ হওয়ার পথে। জাপানী ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা হবে এই মাতারবাড়ীতে।

এক সময়ে যে মাতারবাড়ী দিনের আলোতে আলোকিত ছিল কিন্তু রাতের বেলা বাড়িঘরের আলো বলতে হারিকেনের আলোকে বোঝাত। সেই মাতারবাড়ী এখন বিদ্যুতের আলোর ঝলকানিতে ভিন্নরূপে আবির্ভূত হয়ে আছে। একের পর এক কর্মযজ্ঞ এগিয়ে চলেছে। অনুন্নত ও অখ্যাত এই গ্রামটি এখন রীতিমত শহরে রূপ নিয়েছে। পশ্চিমে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন থেকে লক্ষ্য করলে মনে হবে সামনে উন্নত কোন রাষ্ট্রের একটি অংশ বলে মনে হয়।

মাতারবাড়ীতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ সমাপ্ত হলে আমদানি-রফতানিতে দেশ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। আমদানি পণ্যবাহী বড় বড় জাহাজগুলো অর্থাৎ মাদার ভ্যাসেল বর্তমানে কুতুবদিয়ার অদূরে গভীর সমুদ্রে নোঙ্গর করে। সেখান থেকে লাইটার জাহাজ দিয়ে লাইটারিং করা হয়। আর কন্টেনার বোঝাই বড় জাহাজগুলোর পণ্য সিঙ্গাপুর থেকে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসা হয়। গভীর সমুদ্র বন্দর কাজ শুরু করলে ট্রান্সশিপমেন্টের বড় একটি অংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে, অতি সম্প্রতি চট্টগ্রাম থেকে ইতালি সরাসরি কন্টেনারযোগে পণ্য জাহাজীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। যা ইতোমধ্যে গার্মেন্টস সেক্টরের জন্য বড় একটি দিক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কেননা, সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি আর্থিক সাশ্রয়ও ঘটবে বড় অঙ্কের।

মাতারবাড়ীকে ঘিরে সরকার অর্থনীতির উন্নয়নের প্রকল্প বাস্তবায়নে যে চিন্তা ভাবনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে ইতোমধ্যে এটি সঠিক হিসেবে দেশে-বিদেশে স্বীকৃতি পেয়েছে। ছোট্ট এই দ্বীপে বড় দেশ জাপানের বড় বিনিয়োগ যা দেশের অর্থনীতির আগামীর চেহারাকে পাল্টে দেবে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
February 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!