শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ


  • অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় :২১ আগস্ট, ২০২২ ২:১২ : পূর্বাহ্ণ 244 Views

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,হাসপাতাল,ক্লিনিক,খেলাধুলার স্থান ও শিশু পার্কের সীমানার ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ। লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতীত তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য নিষিদ্ধ।ভ্রাম্যমাণ দোকানে বা ফেরি করে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) এর অধিকতর সংশোধনীর লক্ষ্যে প্রস্তুতকৃত খসড়ায় এসব বিধান রাখা হয়েছে। এই খসড়ার ওপর জনমত যাচাইয়ের জন্য সব স্টেকহোল্ডারের মতামত নেয়ার জন্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মতামত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রাপ্ত মতামত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বাছাই শেষে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মিটিংয়ে বসবে বলে জানা গেছে ।

এ ছাড়া খসড়ায় ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (ই-সিগারেট) নিষিদ্ধ। কুম্ভি পাতা, টেন্ডু পাতার বিড়ি নিষিদ্ধ। তামাকজাত দ্রব্যের সাথে মিষ্টিদ্রব্য, মসলা সুগন্ধি (ফ্লেভার), আসক্তিমূলক দ্রব্য, রঙ ব্যবহার নিষিদ্ধ। সম্পূর্ণ প্যাকেট, মোড়ক বা কৌটা ব্যতীত খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করা যাবে না। খসড়ায় ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য করা এবং কারাদণ্ডের বিধান রাখা। ধূমপান এলাকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা ও পাবলিক প্লেসের সংজ্ঞাতে চায়ের দোকান অন্তর্ভুক্ত করা। লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতীত তামাক ও তামাকজাতদ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা। সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর) নিষিদ্ধ করা। বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন বন্ধ করা। একক শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধ করা। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে এমন সব বিধান রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৬ জুন ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) এর অধিকতর সংশোধনী আনয়নের লক্ষ্যে প্রস্তুতকৃত খসড়ার ওপর জনমত যাচাইয়ের নিমিত্ত সব স্টেকহোল্ডার মতামত গ্রহণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। খসড়া আইনটির ওপর ছক মোতাবেক সুনির্দিষ্ট মতামত ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের ঠিকানায় প্রেরণের অনুরোধ করা হয়। ইতোমধ্যেই মতামত গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মতামত পেয়েছি এবং অনেক মতামত এসেছে। সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। এগুলো বাছাই করার পর আমরা মিটিংয়ে বসব। বিপুল পরিমাণে মতামত আসার কারণে মিটিংয়ে বসতে সময় প্রয়োজন হবে।

তবে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) শতভাগ বাস্তবায়ন না করে নতুন সংশোধনীর প্রস্তাবনাগুলো অযৌক্তিক এবং বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনপ্রয়োগে জনসাধারণ এবং স্টেকহোল্ডারদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। যাদের জন্য আইনটি সংশোধন করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের (উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান, ক্রেতা- খুচরা বিক্রেতা) সাথে আলোচনা না করে এই খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এ কারণে আইন করলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। অবাস্তব প্রস্তাবনাগুলো এই খাতের সাথে জড়িতদের বিপাকে ফেলবে। এতে সরকার রাজস্ব হারাবে, চাষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এবং তাদের পরিবার আর্থিকভাবে অনিশ্চয়তার দিকে ঝুঁকে পড়বে, এই বিশাল সাপ্লাই চেইনের সাথে জড়িত সব অংশীজন ও তাদের জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় যুগোপযোগী এবং বাস্তবসম্মত, বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১০ সালে তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহারকারীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশ ছিল। ২০১৩ সালের দূরদর্শী সংশোধনীর মাধ্যমে ২০২২ সালে এসে সরকার এই সংখ্যা সাফল্যের সাথে ৩৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যমান আইনটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হলে এই সংখ্যাটি আরো কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তামাকখাতের স্বার্থের সাথে সাংঘর্ষিক প্রস্তাবিত সংশোধনীর ধারাগুলো বাস্তবায়ন করা সমীচীন হবে না।

এ বিষয়ে বিএটি বাংলাদেশের হেড অব এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স শেখ শাবাব আহমেদ বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ে মতামত দিয়েছি। সিগারেট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, জাপান টোব্যাকো (জেটি), দোকান মালিক সমিতিও তাদের মতামত দিয়েছে। আমরা চাই আইন করার আগে এই সেক্টরের স্টেকহোল্ডারদের সাথে বসা উচিত। এই প্রসঙ্গটা বাইপাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
January 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!