পতেঙ্গা টার্মিনাল পাচ্ছে সৌদি আরব


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ৮:২৫ : অপরাহ্ণ 293 Views
সভায় উপস্থিত সূত্রগুলো বলছে, বন্দরের দক্ষতার ক্ষেত্রে যে দুটি প্রকল্প সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে এর মধ্যে একটি বে-টার্মিনাল এবং অপরটি পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল। দুটি প্রকল্পই দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর অবকাঠামো চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সে কারণে এই দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী দেশগুলোর সক্ষমতা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক প্রস্তাবের বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। উল্লিখিত দুটি প্রকল্পে ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি দেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। এর মধ্যে পতেঙ্গা টার্মিনালের কাজটি সৌদি আরবকে দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার রাফিউল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কোনো দেশের মাধ্যমে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ওই দেশের সরকার টু সরকার চুক্তি থাকতে হয়। যেহেতু সৌদি আরবের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি নাই, সে কারণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সৌদি সরকারের সঙ্গে আগে চুক্তি বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়েছে।

চুক্তি হয়ে গেলে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ পাবে সৌদি।নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আলোচনায় পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালটি পিপিপি (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) ভিত্তিতে করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশ এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত একটি প্রতিবেদন পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য যে হারে বাড়ছে, তাতে চট্টগ্রাম বন্দরে আরও একাধিক কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম

বন্দরের মাধ্যমে পণ্য-কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ প্রায় ১২ শতাংশ বাড়ছে। এরপরও গত এক যুগে নতুন  কোনো টার্মিনাল গড়ে ওঠেনি। ফলে বন্দরের সক্ষমতাও খুব একটা বাড়েনি। সর্বশেষ ২০০৭ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল। এরপর দীর্ঘদিন নতুন টার্মিনাল ও জেটি নির্মাণ না হওয়ায় কনটেইনার লোড-আনলোডিংয়ে হিমশিম খাচ্ছে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর।

এ অবস্থায় দেশের বহির্বাণিজ্যের প্রধান গেটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বে-টার্মিনাল, লালদিয়া টার্মিনাল ও পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, আলোচ্য তিন প্রকল্পের মধ্যে লালদিয়া টার্মিনাল এখনো ফাইলপত্রেই সীমাবদ্ধ। বে-টার্মিনালের কিছু ভূমি অধিগ্রহণ হয়েছে। ফিজিবিলিটি স্টাডির পর এখন পরামর্শক নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। তবে উপরের দুই প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এখন জরুরি প্রয়োজন মেটাতে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের ওপরই বেশি জোর দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চবক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর বন্দরের ড্রাইডক থেকে বোট ক্লাব পর্যন্ত ৩২ একর জমিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই মধ্যে বন্দরের নিজস্ব তহবিল থেকে সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণসহ বেশ কিছু কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থাপনা নির্মাণ কাজ প্রায় ১৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। চার লেনের ১ দশমিক ২ কিলোমিটারের নতুন একটি সড়ক তৈরি হয়েছে এ প্রকল্পের অধীনে। তাতে ভিন্নমাত্রা যোগ করছে ৪৬০ মিটারের দুই লেনের ফ্লাইওভার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পে তিনটি কনটেইনার ও একটি ডলফিন (তেল খালাসের) জেটি থাকবে। একসঙ্গে ভিড়তে পারবে তিনটি কনটেইনার জাহাজ। টার্মিনালটি সাগরের কাছাকাছি হওয়ায় বন্দরের বর্তমান জেটির চেয়ে কম সময়ে জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। বার্থিং করা যাবে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। এ টার্মিনালের মাধ্যমে বছরে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!