এই কলংক মুছবে কীভাবে বাংলাদেশ!


প্রকাশের সময় :২৫ নভেম্বর, ২০১৮ ২:৪৫ : অপরাহ্ণ 578 Views

নিউজ ডেস্কঃ-এক সর্বগ্রাসী দুর্নীতি-সন্ত্রাসে মেতে উঠেছিলো তারা। উচ্চপর্যায় থেকে তৃনমূলে বিষবৃক্ষের মতো ছড়িয়ে পড়েছিলো অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা। দলের নেতাকর্মীরাই হয়ে উঠেছিলো সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। নুন আনতে যাদের পান্তা শেষ হতো, ক্ষমতার জীয়ন কাঠির ছোঁয়ায় সন্ত্রাস-লুটতরাজ-দখলে তারা হয়ে উঠেছিলেন কোটিপতি। মন্ত্রী মহোদয়েরা তো ছিলেন আরো এক কাঠি এগিয়ে। কমিশন বানিজ্য তো ছিল সাধারণ ব্যাপার, কোথাও কোথাও প্রকল্পের পুরো টাকা হাপিশ করে দিতেন। এছাড়াও ঘুষগ্রহণ, সন্ত্রাসে মদদ ইত্যাদি ছিল নিত্যকার ঘটনা।

পাঠকের নিশ্চয়ই বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না যে কোন আমলের কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ, বলছি বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের কথা। একের পর কেলেংকারিতে দেশের ভাবমূর্তি বারবার হতে থাকে প্রশ্নবিদ্ধ। এসব বিষয়ে সরকারের দায়সারা ভাব বাংলাদেশের সম্মান আরো ম্লান করে দেয়। তেমনি একটি ঘটনা ‘নাইকো দুর্নীতি কেলেংকারী’।

২০১১ সালের ২৩ জুন কানাডার একটি আদালত খালেদা সরকারের জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসাইনের দুর্নীতি মামলার বিষয়ে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিল। মোশাররফ কানাডার কোম্পানী নাইকোকে অনৈতিকভাবে সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে একটি দামি গাড়ি উপহার পেয়েছিল নাইকোর কাছ থেকে যার আর্থিক মূল্য ছিল কানাডিয়ান ডলারে ১,৯০,৯৮৪ ডলার। নাইকো আরো ৫ হাজার কানাডিয়ান ডলার ঘুষ দিয়েছিল মোশাররফকে তার স্বপরিবারে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের জন্য। আর নাইকো একেএম মোশাররফ হোসাইনকে ওই ঘুষ দিয়েছিল এটা নিশ্চিত করতে যে, নাইকো বাংলাদেশ থেকে তাদের ঠিক করা দামে গ্যাস কিনতে পারবে ও তা বিক্রি করতে পারবে এবং গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরনের কারণে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জরিমানা আরো কমানো হবে। ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট রিট পিটিশনের ( পিটিশন নাম্বার: ৫৬৭৩) রায় দেয়। রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ, এফবিআই এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সমস্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, ২০০৩-০৬ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ খালেদা জিয়ার শাসনামলে নাইকোর কাছ থেকে বড় ধরনের ঘুষ লেনদেনের ঘটনা ঘটেছিল অনৈতিকভাবে তাদের সুবিধা দেয়ার নামে। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আদেশের লক্ষণীয় বিষয় হলো, নাইকো একেবারে নির্লজ্জভাবে ঘুষ দিয়েছিল।

নাইকোর এজেন্ট কাশিম শরীফকে চার মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল ও ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভুইয়ার মাধ্যমে পাঁচ লাখ ডলার দিয়েছিল। আর নাইকো তাদেরকে পরামর্শক হিসেবে এইসব টাকা দিয়েছিল যা তৎকালীন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্তাদের প্রদান করতে এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। আর এইসব সকল তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।

তাদের তথ্যপ্রমাণ এটাই প্রমাণ করে যে, নাইকো তাদের বাংলাদেশী এজেন্টদেরকে সুইস ব্যাংকের মাধ্যমে প্রথমে বার্বাডোজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কাশিম শরিফ এবং সেলিম ভুইয়ার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকাগুলো দেন। পরে ওই টাকা চলে যায় তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের অ্যাকাউন্টে। আর এসবকিছুর পেছনেই উঠে আসে দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে কুখ্যাত তারেক জিয়ার নাম।

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!